বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এখন আমরা যুদ্ধের মাঝামাঝি অবস্থা করছি। এই যুদ্ধে আমরা জয়ী হতে না পারলে গণতন্ত্র ধ্বংসের মুখে পড়বে।”
তিনি বলেন, “এই যুদ্ধে ছাত্র সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ সকল যুদ্ধেই ছাত্র সমাজ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে।”
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহামানের জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্রদল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাস্তায় শুধু দু’একটি গাড়ি ভাঙচুর না করে হাজারে হাজারে রাস্তায় নেমে আসতে হবে এবং বিক্ষোভে ফেটে পড়তে হবে। এজন্য অতিদ্রুত যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংগঠন নেই তা করার নির্দেশ দেন তিনি।
ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আন্দোলনে জয়ী হলে সেটাই তারেক রহমানের জন্মদিনের সবচেয়ে বড় উপহার হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারের চেহারা পরিবর্তন না হলে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে বিরোধী দল কখনোই নির্বাচনে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ফখরুল।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনার সরকারের চেহারা পরিবর্তন না হলে, এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে বিরোধী দল কখনোই নির্বাচনে যাবে না।”
ফখরুল বলেন, “এ সরকার সর্বদলীয় সরকার নয়। এটা নির্বাচনকালীন সরকারও নয়। এ সরকার মহাজোট সরকারের একটি পুনঃগঠিত রূপ মাত্র।”
‘প্রধানমন্ত্রী বিএনপিরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জনিয়েছে’- এ প্রসঙ্গে প্রধামন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল ইসলাম বলেন, “আপনি (শেখ হাসিনা) বলছেন নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। আপনি হেলিকপ্টারে করে সারাদেশে নৌকায় ভোট চাচ্ছেন আর আমাদেরকে বলছেন আসুন নির্বাচনে আসুন।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতারা বাদ্য বাজিয়ে নমিনেশন কিনছেন। আপনি (শেখ হাসিনা) কি মানুষকে বোকা ভাবেন, যে আপনার অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? জনগনকে বোকা বানিয়ে, বিভ্রান্ত করে নির্বাচন করা যাবে না। গোটা বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেইং ফিল্ড দরকার। যেন সবাই সমানভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। অন্যথায় বিরোধীদল ডুগডুগি বাজিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে না।”
এছাড়া সরকার আজ পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তারেক রহমানের ওপর একটি বিদেশি সংস্থার জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকার তারেক রহমানের চরিত্রকে নষ্ট করার জন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। কিন্তু তাদের সেই মিথ্যা মামলার জবাব দিয়েছে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ। কারণ তারা এখন তারেক রহমানের আর্দশকে বিশ্বাস করে।
এসময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “আপনি বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা করতে পারেন কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। যদি আপনি মনে করেন নেতাদের গ্রেপ্তার ও হত্যা করে ক্ষমতায় থাকবেন। তাহলে আপনি বোকার সঙ্গে বসবাস করছেন।”
তিনি আরো বলেন, “সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে আপনি (শেখ হাসিনা) আর মানুষের কষ্ট, দুঃখ ও হতাশা বাড়াবেন না। মানুষকে যদি আপনি কষ্ট দিতে না চান। তাহলে অবিলম্বে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পৃক্ত করে নির্বাচন দিন।”
আয়োজক সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুর করিম চৌধুরী আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, চলচ্চিত্রকার গাজী মাযহারুল আনোয়ার, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আনোয়ারুল হক রয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হাসান প্রমুখ।