শচীনেরও শূন্য আছে অনেক!

শচীনেরও শূন্য আছে অনেক!

পরিসংখ্যানে তার একক রাজত্ব। ব্যাটিংয়ের প্রায় সব রেকর্ডই তার। টেস্ট ও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান করাসহ আরো বহু রেকর্ডকে নিয়ে নিয়ে গেছেন হিমালয়সম উচ্চতায়। তারপরও কিছু হতাশার ছিঁটে আছে শচীন টেন্ডুলকারের ক্যারিয়ারে। তারও আছে শূন্যতেই মাঠ ছাড়ার অভিজ্ঞতা!

টেস্ট 

রেকর্ড ২০০টি টেস্ট ম্যাচের ক্যারিয়ারে শচীন শূন্যতেই ফিরে গেছেন মোট ১৪বার। সবচেয়ে বেশি চারবার অস্ট্রেলিয়ার সাথে। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার শিকার হয়েছেন গ্লেন ম্যাকগ্রার বলে। দ্বিতীয়বার ১৯৯৯ সালে, এবারও তাকে শিকার করেছেন ম্যাকগ্রা। তৃতীয়বার ২০০৩ সালে, বোলার ছিলেন জেসন গিলেস্পি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ ২০০৩ সালেই শূন্য রানে ফিরেন তিনি। বোলার ছিলেন ব্রেট লি। এই চার শূন্যের তিনটিই দ্বিতীয় ইনিংসে, বাকি একটি প্রথম ইনিংসে।

টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে তিনবার করে শূন্য রানে আউট হয়েছেন শচীন। ১৯৯২ সালে প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শূন্য রানে ফিরেন শচীন, বোলার ছিলেন মাত্র নয়টি টেস্ট খেলা ব্রেট শল্টজ। শচীন দ্বিতীয়বার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শূন্য হাতে ফিরেন ২০০৬ সালে, বোলার ছিলেন মাখায় এনটিনি। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আবারও শূন্যতেই শচীনকে ফেরান এনটিনি।

২০০২ সালে শচীনের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেলিন ক্যারিবীয় বোলাররা! ওই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনবার শূন্য রানে ফিরেন তিনি।  প্রথমবার শূন্যতে শচীনকে শিকারের সৌভাগ্য হয়েছিলো অ্যাডাম স্যানফোর্ডের। পরের দুইবার এ কাজ করেছেন পেড্রো কলিন্স।

পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই বার খালি হাতে ফিরেছেন শচীন। প্রথমবার ১৯৯৯ সালে, বোলার ছিলেন সাকলাইন মোস্তাক। একই বছর শোয়েব আখতারের বলেও শূন্যতে আউট হন এই ব্যাটিং জিনিয়াস।

ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একবার করে শূন্যতে আউট হয়েছেন শচীন। ১৯৯০ সালে তিনি শিকার হয়েছিলে ইংলিশ বোলার ড্যানি মরিসনের। ১৯৯২ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শূন্যতে ফিরেন লিটল মাস্টার। বোলার ছিলেন জন ট্রাইকস।

ওয়ানডে 

ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ৪৬৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন শচীন টেন্ডুলকার। দীর্ঘ এই পথ পরিক্রমায় মোট ২০বার শূন্য হাতে ফিরেছেন তিনি।

শচীনের ব্যাটকে নিস্ক্রিয় করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন পাকিস্তানি ও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলাররা। এ দুই দলের বোলারদের কাছে পাঁচবার করে মোট দশবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন রেকর্ডের বর-পুত্র।

১৯৮৯ সালে অভিষেকেই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার শূন্য রানে শেষ হয় শচীনের ইনিংস। বোলার ছিলেন ওয়াকার ইউনুস। ক্যাচ নিয়েছিলেন ওয়াসিম আকরাম- গ্রেট আউটই বটে! ১৯৯১ সালে আকিব জাভেদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয়বার শূন্যতে ফেরেন শচীন। ১৯৯৭ সালে তৃতীয়বার পাক-বোলাররা শূন্যতে ফেরান শচীনকে। এবার বোলার ছিলেন মোহাম্মদ আকরাম। ২০০৪ সালে পাকিস্তানের হয়ে শচীনকে শূন্য রানে ফেরানোর সৌভাগ্য অর্জন করেন সাব্বির আহমেদ। পরে ২০০৬ সালে তার সাথে যোগ দেন মোহাম্মদ সামিও।

১৯৯৪ সালে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথমবার শূন্যতে ফিরতে হয় শচীনকে। বোলার ছিলেন তৎকালীন দুর্ধর্ষ পেসার কোর্টনি ওয়ালশ। একই বছর দ্বিতীয়বার শচীনকে শূন্যতে ফেরার ক্যামেরুন কাফি। ১৯৯৯ সালে শচীনকে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তৃতীয়বার শূন্যতে ফিরতে বাধ্য করেন কোর্টনি ওয়ালশ। ২০০১ সালে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে চতুর্থবার শূন্যতে ফেরার যন্ত্রণা পোহাতে হয় লিটল মাস্টারকে। বোলার ছিলেন কোরে কোলিমোর। সর্বশেষ ২০০৭ সালে শচীনকে শূন্যতে ফেরান ড্যারেন পাওয়েল।

শূন্য রানে শচীনকে চারবার ফিরিয়েছেন কিউই বোলাররা। প্রথমবার ডুনেডিনে, ১৯৯০ সালে। বোলার ছিলেন শেন থমসন। নয় বছর পর দ্বিতীয়বার কিউইদের হয়ে শূন্যতে ফিরেন শচীন। বোলার ছিলেন ক্রিস কেয়ার্নস। একই বছর শচীনকে এই স্বাদ আস্বাদন করান ড্যানিয়েল ভেটোরি। কিউইদের বিপক্ষে সর্বশেষ ২০০৩ সালে শেন বন্ডের দুরন্ত পেস বোলিংয়ে শূন্য হাতে ফেরেন শচীন।

শ্রীলঙ্কার বোলারদের কাছে শচীনকে শূন্য রানে ফিরতে হয়েছে মোট তিনবার। প্রথমবার ১৯৯৪ সালে, চামিন্দা ভাসের বলে। এরপর আবার ২০০৭ এর বিশ্বকাপে, বোলার ছিলেন দিলহারা ফার্নান্দো। সর্বশেষ ২০০৮ সালে অ্যাডিলেডে। বোলার ছিলেন ল্যাসিথ মালিঙ্গা।

অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা শূন্য রানে শচীনকে ফেরাতে ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন দুইবার। প্রথমবার ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে। বোলার ছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। ২০০৭ সালে দ্বিতীয়বার, বোলার ছিলেন মিচেল জনসন।

মাত্র একবার কোনো রান করতে না দিয়েই শচীনকে ফিরিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯৭ সালে প্রোটিয়া বোলার শন পোলকের হয়েছিলো এই সৌভাগ্য

খেলাধূলা