বিদায় লগ্নে দাঁড়িয়ে আছেন শচীন টেন্ডুলকার। ১৪ নভেম্বর ২০০ তম টেস্টের মাইলফলক স্পর্শ করার ম্যাচটিই তার জীবনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তার বিদায়ের আবেগে আক্রান্ত পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। যে আবেগের স্রোত সবচেয়ে বেশি বইছে শচীনের নিজশহর মুম্বাইয়ে। ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়ার খবর, মুম্বাইয়ের প্রতিটি অলি-গলিও শচীনের বিদায়ের যন্ত্রণায় ভারাক্রান্ত। তারা যেনো হারিয়ে ফেলছে প্রাণের প্রিয়জনকে, তারা যেনো দূরে সরে যাচ্ছে আত্মার আত্মীয়ের সংশ্রব থেকে।
মুম্বাই ও সমগ্র ভারতবাসীর এই আবেগী স্রোতে গা ভাসিয়েছেন সেরা ব্যাটসম্যানের তর্কে শচীনের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যারিবীয় ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা। তিনি বিশ্বাস করেন, ক্রিকেটের ইতিহাসে শচীনই শ্রেষ্ঠতম ক্রিকেটার। তার আগে এমন ক্রিকেটার আর আসেনি, ভবিষ্যতেও শচীনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো কেউ আসবেন না।
২০০ তম টেস্টের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শচীনের বর্ণাঢ্য ক্রিকেট ক্যারিয়ারে হিমালয়সম উচ্চতায় আরোহনের দিকে ইঙ্গিত করে লারা বলেন, “ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্টে সর্বোচ্চ রান করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ রান করেছেন ওয়ানডেতেও। এটি এক অবিশ্বাস্য অর্জন। তার আগে এমন কেউ পারেনি। ভবিষ্যতেও কেউ এটি করতে পারবে না।”
লারা যতোদিন ক্রিকেট খেলেছেন, তাকে মনে করা হতো শচীনের সমতূল্য এক ব্যাটসম্যান। শচীন আর তাকে নিয়ে চলতো ভক্তদের যারপরনাই তর্ক। কে সেরা; শচীন? নাকি লারা? শচীনের অনেক আগে অবসর এই তর্ক থামিয়ে দিয়েছেন লারা নিজেই।
ভক্তদের তর্কের উত্তাপে জল ঢেলে দিয়ে লারা মনে করেন, তিনি নন; শচীনই সেরা। লারা বলেন, “শচীনের ক্রিকেট এই খেলাটার প্রতি প্রভাব ফেলেছে, যে প্রভাব তার দেশবাসীর উপর ফেলেছে, তা আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি একাই বছরের পর বছর কোটি কোটি মানুষের প্রত্যাশার ভার বয়েছেন। এক কথায় পুরো বিষয়টি অবিশ্বাস্য!”
শচীনের অভিষেক হয়েছিলো মাত্র ১৬ বছর বয়সে, ১৯৮৯ সালে। তখন থেকে দীর্ঘ দুই যুগ অবিরাম খেলে গেছেন তিনি। সে ধারাবাহিকতায় গত বছর তিনি একশ’টি সেঞ্চুরি করার অনবদ্য রেকর্ড গড়েছেন। সে দিকে ইঙ্গিত করে লারা বলেন, “শচীনের ক্যারিয়ার পরিসংখ্যানই তার বিশালতা বোঝানোর জন্য যথেষ্ট।”
শচীন-মুগ্ধ লারা আরো বলেন, “শচীন হলেন ক্রিকেটের মোহাম্মদ আলী। বক্সিংয়ের কথা বললেই যেমন আলীর কথা মনে পড়ে। তেমনি এক সময় ক্রিকেটের কথা বললেই লোকে শচীনের আলোচনা করবে।”