যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের সব ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার অঙ্গীকার নিয়ে শেষ হলো ঢাকা জোড়া মানববন্ধন। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের এ মানববন্ধন শুরু হয়।
১৪ দলের হাজার হাজার নেতা- কর্মী এ মানববন্ধনে অংশ নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জোর দাবি তোলেন। এ মানববন্ধনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি আরো জোরালে হলো বলেও মত প্রকাশ করেন নেতারা।
বস্তুত বিকেল তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত এক ঘণ্টাব্যাপী ঢাকার গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত রাস্তার পাশের দীর্ঘ মানবন্ধন রচনা করা হয়।
বিকেল তিনটার আগেই আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে এসে মানববন্ধনে যোগ দেন।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন তারা।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ারেম সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীকগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ প্রমুখ।
বিকেল চারটার পরপর মানববন্ধন শেষ হয়।
এছাড়া গাবতলী, শ্যামলী, আসাদ গেট, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোড, রাসেল স্কোয়ার, গ্রীন রোড, বসুন্ধরা সিটি, সোনারগাঁও হোটেল, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, নূর হোসেন স্কোয়ার, ইত্তেফাক মোড়, রাজধানী মার্কেট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী ও বিশ্বরোড বারিধারা সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
গাবতলী এলাকায় মানববন্ধনে ঢাকা-১৪ আসনের এমপি আসলামুল হক নেতৃত্ব দেন। এখানে আরো ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য কামরুল আহসান প্রমুখ।
এ এলাকায় মিরপুর বাংলা কলেজে ছাত্রলীগও ব্যাপক শোডাউন দেয়।
আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন পরিবহন সংগঠন এ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এদিকে মানববন্ধনের কারণে ঢাকায় প্রবশমুখে বেশকিছু যানবাহন চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
বেলা তিনটা বাজার মিনিট ১৫ আগেও রাসেল স্কোয়ারে জনা ৩০ এর বেশি নেতাকর্মী দেখা যায়নি। কিন্তু উপস্থিত সংবাদকর্মীদের অবাক করে দিয়ে ১৫ মিনিটেই গেরিলা কায়দায় রাসেল স্কোয়ার এলাকা চলে যায় ১৪ দলের নেতকর্মীদের মানববন্ধনের আওতায়। হাজার হাজার মানুষ মুহূর্তেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায় ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে। আসতে থাকে মিছিলও। মানববন্ধনে ফুটপাতে দাঁড়ানোর কথা থাকলেও নেতা-কর্মীরা দাঁড়ান রাস্তাতেই। তাই বাড়তে থাকে যানজটও।
পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি, আব্দুল মান্নান, অপু উকিল, বাহাউদ্দীন নাসিম, পঙ্কজ দেবনাথ, নাজমা আক্তার, মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাউসার, অসীম কুমার উকিল, সুভাস সিংহ রায়, তারানা হালিম, ড. আওলাদ, ইলিয়াস মোল্লা, দেওয়ান শফিউল আলম টুটুল, রওশন জাহান সাথির মতো নবীন-প্রবীন নেতারা যোগ দিলেন রাসেল স্কোয়ারের ১৪ দলের এ মানববন্ধনে।
এ স্পটে এ ফাঁকে একটা শো-ডাউনও সেরে ফেলেন মিরপুরের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা। তিনি কয়েক হাজার লোক সঙ্গে নিয়ে আসেন পিকআপে করে যুদ্ধাপরাধীদের কুশপুত্তলিকা আর রিকশায় করে মাইক নিয়ে। এ মাইক থেকে অনবরত বাজতে থাকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ।
মানববন্ধন শেষে উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি। তিনি মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
এছাড়াও তিনি যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচারেরও দাবি জানান।
রাসেল স্কোয়ারের এ মানববন্ধন পান্থপথের শমরীতা হাসপাতাল থেকে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
এদিকে দুপুর ৩টার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হবার কথা থাকলেও ওই সময় পান্থপথ ঘুরে কাওরানবাজার, বাংলামটরে দলের কোন নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। তবে পরে এ এলাকায় লোক সমাগম বাড়ে।
এছাড়া আসাদ গেট এলাকায় ছিলেন সতীশ চন্দ্র রায়, জাহাঙ্গীর কবীর নানক এমপি, মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, নাজমা আক্তার এমপি প্রমুখ।
বিশ্ব রোড বারিধারা এলাকায় ছিলেন কাজী জাফর উল্লাহ, রহমত উল্লাহ এমপি, লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান এমপি, এইচএন আশিকুর রহমান এমপি, টিপু মুন্সি এমপি প্রমুখ।
শাহবাগ এলাকায় ছিলেন ওবায়দুল কাদের এমপি, নূরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, বি. এম মোজাম্মেল হক এমপি, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডা. বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, ডা. ইকবাল আর্সনাল, ডা. কামরুল হাসান খান, বদিউজ্জামান সোহাগ ও সিদ্দিকী নাজমুল আলম প্রমুখ।
প্রেসক্লাব এলাকায় ছিলেন ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি, নূহ-উল-আলম লেনিন, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শ্রী সুজিত রায় নন্দী, আখতার জাহান প্রমুখ।
মৎস্য ভবন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও হাইকোর্ট এলাকায় ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু এমপি, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান এমপি, ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী এমপি, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, অ্যাডভোকেট বাছেদ মজুমদার, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু, অ্যাডভোকেট এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওছার, ইঞ্জিনিয়ার সবুর প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধু স্কোয়ার এলাকায় ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, মৃণাল কান্তি দাস, ওমর ফারুক চৌধুরী, এনাজুর রহমান প্রমুখ।
ইত্তেফাক মোড় এলাকায় ছিলেন ডা. দীপু মণি এমপি, ফজিলাত্নুনেসা ইন্দিরা এমপি, আসাদুজ্জামান নূর এমপি, হাবিবুর রহমান সিরাজ, আক্তারুজ্জামান, ড. মির্জা জলিল প্রমুখ।
সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছিলেন রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আলহাজ্ব শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, মির্জা আজম এমপি, শ্রী রায় রমেশ চন্দ্র, রওশন জাহান সাথী এমপি, শামসুন্নাহার ভূঁইয়া এমপি প্রমুখ।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় ছিলেন মতিয়া চৌধুরী এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, ফরিদুন্নাহার লাইলী এমপি, আব্দুল মতিন মাস্টার, পিনু খান এমপি, সাধনা দাস গুপ্তা প্রমুখ।