দেশে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে নিষিদ্ধ ইসলামপন্থী দল হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশ। প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলকে প্রত্যাখ্যান করে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা ‘খিলাফত’ কায়েমের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারিং করেছে দলটি।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা জানান, গত শুক্রবার রাজধানীর কমপক্ষে ৫০টি মসজিদের সামনে সংগঠনটি ‘হাসিনা-খালেদা নিপাত যাক-দেশবাসী মুক্তি পাক’ শ্লোগান সম্বলিত পোস্টার সাঁটায়।
বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করে পোষ্টারে বলা হয়, আওয়ামী-বিএনপির লাশের স্তুপ, দুর্নীতি আর লুটপাট উপহার দিয়েছে দেশের মানুষকে।
বলা হয়, “হাসিনা-খালেদার সংলাপ হোক কিংবা সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হোক কিংবা একদলীয় নির্বাচন হোক- জনগণের জীবনে কোন প্রকৃত পরিবর্তন আসবে না। প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য পুরো শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করতে হবে। যার জন্য প্রয়োজন সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের দেশের জনগণের পক্ষে অবস্থান নেয়া। কিন্তু তা সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নয়; বরং ইসলামী শাসন তথা খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিষ্ঠাবান এবং সচেতন রাজনীতিবিদদের হাতে শাসন ক্ষমতা হস্তান্তর করার লক্ষ্যে।”
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে নিষিদ্ধ এই সংগঠনটি তাদের পোস্টারে বলে, “আওয়ামী বিএনপি শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করে হিযবুত তাহরীর-এর নেতৃত্বে খিলাফাত প্রতিষ্ঠায় সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের নিকট দাবি তুলুন এবং এ দাবিতে রাজপথে নেমে আসুন।”
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, “দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে যাতে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য আমর সতর্ক রয়েছি।”
এসব নিষিদ্ধ ইসলামপন্থী দলগুলোর উপর গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
র্যাব এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, “জঙ্গি সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। তারপরও গোপনে তারা তাদের এই অপতৎপরতা চালাতে চেষ্টা করে। এজন্য র্যাব সব সময় এ জঙ্গি সংগঠনগুলোর প্রতি গোয়েন্দা নজরদারি এবং অভিযান অব্যাহত রেখেছে।”
তবে আইন প্রয়োগকারীর সংস্থার সদস্যরা জানান তাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে দলটির কার্যক্রম। তাদের উপর কড়া নজরদারি রয়েছে বলে জানান তারা।
২০১০ সালে সামরিক বাহিনীতে অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগে জিয়াউর রহমান নামে এক মেজরকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগে বলা হয় মেজর জিয়া হিযবুত তাহরীরের সাথে জড়িত। মেজর জিয়া ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে্ও অভিযোগ উঠে।
‘জননিরাপত্তায় হুমকি’ বিবেচনায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করে সরকার।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ পশ্চিমা প্রায় সবগুলো দেশেই প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালায় এই সংগঠনটি।
হিযবুত তাহরীর সহ মোট পাঁচটি দলকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। অন্য দলগুলো হলো হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি-বি), জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) এবং শাহাদাত এ আল হিকমা।