দেশের অর্থনীতি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের।
তিনি বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, দেশের নিত্যপণ্যের বাজার যথেষ্ট স্থিতিশীল। এক্ষেত্রে সরকার এখন পর্যন্ত যথেষ্ট সফল।
দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্যিক দিক থেকে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, অর্থনীতি ভালো করছে, ভবিষ্যতেও ভালো করবে। অর্থনীতি নিয়ে কোথাও ভয়ের কিছু নেই। কোথাও খারাপ কিছু দেখছি না।
সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র সদস্য ফজলুল আজিমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে রপ্তানি আয় কমে গেছে, এ ধরনের তথ্য যে কোথা থেকে আসে তা আমার জনা নেই। আমরা এখনও আমদানি নির্ভর হয়ে পড়িনি।
আওয়ামী লীগের মনিরুল ইসলাম সম্পূরক প্রশ্নে জানতে চান, দেশের নিত্যপণ্যের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি কী?
জবাবে জিএম কাদের বলেন, এই প্রশ্নটি সবসময়ই আমাদের সামনে আসে। দেশ পরিচালিত হচ্ছে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে। এটা সমাজতান্ত্রিক দেশ নয় যে, সরকার সবকিছু ভর্তুকি দিয়ে কিনে জনগণের চাহিদা মেটাবে। চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের সরবরাহ ঠিক থাকলেই বাজার স্থিতিশীল থাকবে। ডলারের তুলনায় টাকার মূল্যমান কিছুটা কমে যাওয়ায় বর্তমানে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে কেউ যেন কৃত্তিম সংকট তৈরি করে কিংবা পণ্য মজুদ রেখে সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সরকার সে ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ।
সরকার দলীয় সদস্য মঞ্জুর কাদের কোরাইশি সম্পূরক প্রশ্নে জানতে চান, শতাধিক এমএলএম কোম্পানি নিরীহ মানুষকে সর্বস্বান্ত করছে। নানা লোভ দেখিয়ে জনগণ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমএলএম’র নামে অনেকে ব্যাংকিংও করছে। ‘ইউনি পে টু’ নামের একটি কোম্পানি হাজার-হাজার মানুষকে সর্বস্বান্ত করেছে। ‘যুবক’ প্রথম এই প্রতারণা শুরু করে। প্রতিদিন নতুন-নতুন এমএলএম কোম্পানি খোলা হচ্ছে। এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমেও আন্তর্জাতিক চক্র মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
এ প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, এমএলএম- কোম্পানির প্রতারণা বন্ধে আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হয়েছিল। পরে দুয়েকটি জায়গায় তদন্তের দরকার হওয়ায় তা ফিরিয়ে আনা হয়। বর্তমানে নতুন করে আইনের খসড়া তৈরির কাজ চলছে। কিন্তু একথা সত্য যে, এমএলএম ব্যবসার জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও থাইল্যান্ডসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এ ধরনের ব্যবসা বৈধ। তবে আমাদের এখানে কিছু প্রতারণামূলক কাজ হচ্ছে। মানুষকে বিভিন্নভাবে ঠকানো হচ্ছে। এমএলএম’র নামে স্বপ্ন বিক্রি করা হচ্ছে। এমনও বলা হয় যে, গ্রাহক হলে নাকি আফ্রিকায় স্বর্ণ-ডায়মন্ড পাওয়া যাবে। এর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘ইউনি পে টু’র বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এরই মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে।
একই প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ৬৯টি এমএলএম কোম্পানি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে নিবন্ধন নিয়ে ব্যবসা করছে। ২০১০ সাল থেকে দেখা যায়, কিছু কোম্পানি এর অপব্যবহার করছে। এজন্য জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে এখন এই ধরনের নিবন্ধন বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ই এই বিষয়টি মনিটরিং করবে।