পাবলিক পরীক্ষার সময় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি হরতাল, অবরোধ না দিতে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিচারাধীন একটি রিটে জারি করা রুলের সম্পূরক আবেদন হিসেবে রিটকারী ইউনুস আলী আকন্দ রোববার এই আবেদনটি করেন।
ইউনুছ আলী জানান, সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। এখন কোনো একটি বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য তোলা হবে।
আবেদনে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, ইবতেদায়ি, জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি, দাখিল, এইচএসসি, আলিম, ও লেভেল এবং এ লেভেল পরীক্ষার সময় হরতাল না দেওয়ার জন্য বিবাদী ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আবেদনে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ইসলাম আলমগীর, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ২০১২ সালের ২ মে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে। ‘পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে হরতাল ডাকা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না’- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।
একইসাথে পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে হরতাল না দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও জানতে চায় আদালত।
ওইদিন শুনানিতে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য দেশের বিজ্ঞ ১৫ জন আইনজীবীকে ‘অ্যামিকাস কিউরি’ হিসেবে নিয়োগ দেয় আদালত এবং তাদের কাছে বক্তব্য দিতে অনুরোধ করা হয়।
এছাড়াও অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির মতামতও চাওয়া হয়।
আদালত বলে, হরতাল করা মৌলিক অধিকার এবং পরীক্ষা দেওয়াও মৌলিক অধিকার। এ দুই মৌলিক অধিকারের সামঞ্জস্য রক্ষা কীভাবে সম্ভব- সে বিষয়ে আইনগত পরামর্শ দেবেন এই আইনজীবীরা।
এর আগে ‘নিখোঁজ’ এম ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে বিএনপি ২০১২ সালের ২২ থেকে ২৪ এপ্রিল এবং ২৯ ও ৩০ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করে। ফলে ওই দিনগুলোর এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
রিটকারী ইউনুস আলীর মেয়েও এইচএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় ওই রিট করেন তিনি।
ইউনুস আলী তার রিট আবেদনেও সেই সময়ে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যে হরতাল দেওয়ার ওপর অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা চান। তবে এতে আদালত তখন তাতে সাড়া দেয়নি।
তার নতুন আবেদনে বলা হয়, পরীক্ষার জন্য কোনো তারিখ সুনির্দিষ্ট না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল অবরোধ ডাকতে পারে। বছরের সব দিন পরীক্ষাও হয় না।
রিটে বলা হয়, বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা দেশব্যাপী ৬০ ঘণ্টা হরতালে ২০ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী বড় ধরণের ধাক্কা খেতে যাচ্ছে। হরতালের এই সময়েই জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষা রয়েছে।
আরো বলা হয়, “শিশু ও তাদের অভিভাবকদের দুর্দশা এতেও শেষ হবে না। কারণ পরের সপ্তাহেও তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনে যাচ্ছে। এটা প্রাইমারির ৩০ শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদেরকেও উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ ২০ নভেম্বর থেকে তাদের পরীক্ষাও শুরুর কথা রয়েছে। তাদেরও প্রস্তুতি শেষ। পরীক্ষার পুনঃসময়সূচি দিলে তা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে