‘গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে’

‘গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে’

hafigদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলে সরকারকে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি।

তিনি বলেন,”নাস্তিকরা যেভাবে মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ন্ত্রণে উঠেপড়ে লেগেছে তাতে আর বসে থাকা যায় না। তাদের প্রতিহত করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাঠে নামলে দেশে যে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তার দায় দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।”

রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর এক কমিউনিটি সেন্টারে হেফাজতে ইসলামী আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের পরে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে শাহ আহমদ শফি উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার পক্ষে পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী।

বক্তব্যে বলা হয়, কওমি মাদ্রসাগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার যে আইন পাস করতে যাচ্ছে তা প্রত্যাহার না করলে দেশের আলেম সমাজ মাঠে নামতে বাধ্য হবে।

কওমি মাদ্রাসার আইন পাসের উদ্যোগের প্রতিবাদে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ নভেম্বর সারা দেশে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল, ২ নভেম্বর হাটহাজারী কলেজ মাঠে মহাসমাবেশ এবং ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মহাসমাবেশ করা হবে।

কর্মসূচি ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, সরকার আইন পাস করা থেকে বিরত থাকার ঘোষণা না দিলে ১৫ নভেম্বরের পর হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

এ সময় তিনি নাস্তিকদের প্রতিরোধে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, এতে যে কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তার দায় দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়েছে,”সরকার ও অতি উৎসাহী কতিপয় মিডিয়া কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ ছাড়া একের পর এক মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত সংবাদ পরিবেশন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। লালখান বাজার মাদ্রসায় ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনাকে ঘিরে হাটহাজারী মাদরাসাসহ সারা দেশের কওমি মাদরাসাসমূহকে জঙ্গি ও বোমাবাজীর সাথে জড়িত প্রমাণ করার জন্য ভয়াবহ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই,”বাংলাদেশের কোনো কওমি মাদ্রসার কোনোরূপ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ নেই। এসব মাদরাসায় সৎ, আদর্শবান ও খোদাভীরু আলিম তৈরি হয় যারা সারাজীবন সমাজ, সমাজের মানুষ ও মানবতার সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে যায়। দেশের আইনবিরোধী অনৈতিক কাজে তারা কখনো সম্পৃক্ত হয়নি।”

৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে, রাতের অন্ধাকারে নবীপ্রেমিক জনতার ওপর যৌথবাহিনী দিয়ে এক লাখ পঞ্চান্ন হাজার রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে। লক্ষ লক্ষ নিরীহ মুসলমানদের ওপর ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এ ঘটনা অসংখ্য ওলামা-পীর-মাশায়েখকে শহীদ করা হয়েছে। বহু মানুষ চিরদিনের জন্য পঙ্গু ও অন্ধ হয়ে গেছেন। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে সরকারদলীয় ক্যাডার, নাস্তিক-মুরতাদদের দোসররা নৃশংস হামলা চালালো অথচ উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে সারাদেশে অর্ধশতাধিক মামলা হয়রানি করা হচ্ছে।  বায়তুল মুকাররম এলাকায় সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা  সেদিন পবিত্র কুরআন পুড়িয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা করা হয়। যা অত্যন্ত ন্যক্করজনক। এই সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় দায়িত্বশীল হেফাজতের বিরুদ্ধে প্রতিদিন অব্যাহত মিথ্যাচার করে চলেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব বাবুনগরী বলেন, কওমি মাদ্রাসার সাথে সরকারের কোন সম্পর্ক নেই, সরকারের উচিত স্কুল কলেজগুলো নিয়ে থাকা, মাদ্রাসায় হাত দিলে সরকারের পরিণতি ভয়াবহ হবে।”

 

শীর্ষ খবর