আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেনে।
তিনি বলেন, “এ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনে ভয় পায়। তাই বিরোধীদলের উপর দমন নিপীড়ন চালায়। বিগত ৫ বছরেও তারা অস্ত্রের রাজনীতি করেছে।”
“তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা দেশবাসীসহ আর্ন্তজাতিক মহলেও নিশ্চিত হয়েছে,” বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “গত ২৫ অক্টোবর জনগনের ভোট অধিকার রক্ষায় যে সমাবেশ ডাকা হয়েছিল তা নস্যাৎ করতে সরকার রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। কোনো কোনো জায়গায় জনগন প্রতিরোধ করে সভা করে। এ সভা পণ্ড করার জন্য ১৮ দলের কর্মীদের গুলি করে হত্যা করে, হামলা মামলা নির্যাতন করা হয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঢাকাসহ সারা দেশে ২৫ অক্টোবরের সমাবেশকে ঘিরে ১৮ দলের কর্মীদের ওপর গুলি চালিয়ে ৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৬শ’। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৭৫ জনকে। এছাড়া ৩১ হাজার নেতা কর্মীদের নামে মামলা হয়েছে।”
প্রশাসনকে দলীয় করণের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “এই সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের নিজস্ব দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছে নিষ্ঠার সাথে। পুলিশ-র্যাব-বিজিবি প্রজাতন্ত্ররে কর্মচারী। কিন্তু এ বাহিনীকে দলীয় ক্যাডারে রুপান্তর করা হয়েছে। বিজিবিকে ব্যবহার করছে দেশের মানষের ওপর। অথচ সীমান্ত অরক্ষিত। সীমান্তে মানুষ মরছে। গত পরশুও এক জনকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে কাটাতারে। অথচ সেই সীমান্তে দায়িত্ব পালন না করে জনগণের সংগ্রাম দমনে তাদের ব্যবহার করছে। র্যাব গঠন হয়েছিল জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। কিন্তু তাদেরকেও ব্যবহার করা হয়েছে জনগণরে বিরুদ্ধে।”
শেয়ারবাজার সংক্রান্ত বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি তদন্ত করতে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারা নিজেরাই ছিল এই কেলেঙ্কারির স্রষ্টা। ফলে তদন্তে প্রকৃত দোষীদের সনাক্ত করা যায়নি ও তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার। প্রকৃতপক্ষে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে সরকারি দল নিজেই জড়িত।”
সরকার কোনো সমালোচনা সহ্য করেনি, বরং দমন নিপীড়নের চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “এই সরকারের আমলে যারাই সরকারের সমালোচনা করেছেন তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। সরকার ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, শ্রমিক নেতা আমিনুলসহ বিরোধীদলের অসংখ্য নেতা কর্মীকে খুন-গুম করা হয়েছে।”
সাংবাদিকরা কর্মক্ষেত্রে যথার্থ স্বাধীনতা পাচ্ছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আজকে দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের স্বাধিনতা নেই। সরকার সমালোচনার জন্য আমার দেশ পত্রিকা, দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামী টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছে। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের মুক্ত চিন্তা কমিয়ে আনতে তারা নিজেরাই এখন নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।”
এই মুহূর্তে জনগণের ‘অভ্যুর্থান’ ঘটেছে বলে দাবি করেন ফখরুলের। তার ভাষ্যমতে, “এই মুহূর্তে জনগণের অভ্যুর্থান চূড়ান্ত। গতকালের সমাবেশের ঘটনা তা-ই প্রমাণ হয়েছে।”
এ সময় তিনি বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন।