অর্জন ধরে রাখতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে : সৈয়দ আশরাফ

অর্জন ধরে রাখতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে : সৈয়দ আশরাফ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দলের নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের যে অর্জন হয়েছে তা ধরে রাখতে হবে। এজন্য আরো সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।’

শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সভা হয়।

এদিন সভার শুরুতে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তা কেবল বাংলাদেশেই নয় পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও প্রভাব পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সময় বাংলাদেশ সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও বোমাবাজের দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। আমরা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে আর পরিচিত হতে চাই না।’

শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো সরকারই শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ করে না। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ করে এসইসি। কোনো অর্থনীতিবিদ আজ পর্যন্ত শেয়ারবাজার ওঠানামার কারণ নির্ণয় করতে পারেনি।’

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ব্রিটেনের একজন মন্ত্রী ঢাকায় এসেছিলেন। আমি তাকে বলেছি, এখন যদি বাংলাদেশে বড় কোনো ঘটনা ঘটে বা জঙ্গি হামলা হয় তার উৎপত্তিস্থল হবে লন্ডন। কারণ বাংলাদেশে এসবের স্থান এখন আর নেই।’

সৈয়দ আরাফুল ইসলাম কাযনির্বাহি সংসদের সভায় সরকারের সফলতার দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের দেশে সৃষ্ট সন্ত্রাস, দুনীতি, বোমাবাজি, জঙ্গিবাদের প্রসঙ্গ সভায় উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর দেশে ৫শ স্থানে এক যোগে বোমাবাজি হয়নি, বিচারকদের উপর হামলা হয়নি। বাংলাদেশ পৃথিবীতে একটি তালেবান রাষ্ট্র হতে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ বিশ্বে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল সেখান থেকে দেশ উদ্ধার হয়েছে, জাতিকে রক্ষা করা হয়েছে। এই অর্জন খাটো করে দেখার বিষয় না।

কিছু দিন আগে একজন ব্রিটিশ ঢাকায় এসেছিলেন। তাকে আমি বলেছি আগামীতে বাংলাদেশে যদি কোনো ঘটনা ঘটে, বড় ধরণের কোনো হামলা হয় তবে সেই ঘটনার উৎপত্তিস্থল হবে লন্ডনে। যেহেতু বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের অভারণ্যের সুযোগ নেই তাই শেখ হাসিনা বা আমাদের উপর কোনো হামলার কোনো পরিকল্পনা হয় তবে সেটা হবে লন্ডনে। বাংলাদেশে এই পরিকল্পনা করার সুযোগ নেই।

আশরাফ বলেন, এটা আমি ব্রিটিশ মন্ত্রিকে বলতে পেরেছি। এটা অনেক বড় অর্জন।

সরকারের এই সফলতা ও অর্জনকে ছোট করে না দেখার পরামর্শ দিয়ে আশরাফ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা আসলে জয়কে বড় করে দেখি না, পরাজয়কেই স্বাভাবিক মনে করি। দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাইয়ের তান্ডব এটাই যেনো স্বাভাবিক আমরা মনে করি।

শেয়ার বাজার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আশরাফ বলেন, শেয়ার বাজার ভালো হয়েছে না খারাপ হয়েছে সেটা সরকারের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলে মুল্যায়ন করা যাবে। বছর শেষ হলে গড় হিসাব করে পরিমাণ করা যায় বছরে কত বৃষ্টিপাত হলো, ভালো, না খারাপ।

শেয়ার বাজার উঠা নামার মধ্যে রয়েছে। নানা কারণে শেয়ার বাজার উঠা নামা করে। শেয়ার বাজার বাড়বে, কমবে। পৃথিবীর কোনো সরকার শেয়ার বাজারের রেগুলেটরি বডি নয়। সরকার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে না। শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এসইসি। পৃথিবীর কোনো অর্থনীতিবিদ শেয়ার বাজার বাড়া কমার কারণ নির্নয় করতে পারেনি।

আশরাফ বলেন, আমাদের যে অর্জন সেই অর্জন ধরে রাখতে হলে আরো সচেষ্ট, উদ্যোগী ও সতর্ক হতে হবে। যদি বাংলাদেশে কোনো হামলা হয় বা দুঘর্টনা ঘটে তবে শুধু বাংলাদেশই ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। পাশ্বর্বর্তী দেশগুলোতে ও সারা বিশ্বে এর প্রভাব পড়বে। কারা এ ধরণের ঘটনা ঘটাতে পারে তারা চিহ্নিত।

তিনি বলেন, আমি বলছি একটাও বোমা ফোটেনি, এটা আবার বেশী বললে হয়তো কালই বোমা ফাটিয়ে খালেদা জিয়া বলবে বোমা না কি ফাটেনি এই যে বোমা ফাটলো।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে তার পুর্বের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, আমি বলেছি সব দুর্ঘটনাই দুর্ঘটনা না। ড্রাইভারের যদি লাইসেন্স না থাকে, যদি ওভার স্প্রিডে চালায়, গাড়ির ফিটনেস না থাকে তাহলে সেটা তো দুঘর্টনা না। এই বিষয়গুলোও তো ভালো ভাবে দেখা দরকার।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা একে একে আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। হতাশার কোনো কারণ নেই, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আর সন্ত্রাসের অভারণ্য, আত্মঘাতি বোমা হামলা, দুর্ণীতি, জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত হতে চাই না।

রাজনীতি শীর্ষ খবর