সরকারের শেষ সময়ে আরও ১১ মেডিকেল কলেজ অনুমোদন

সরকারের শেষ সময়ে আরও ১১ মেডিকেল কলেজ অনুমোদন

madicalমহাজোট সরকারের আমলে এ নিয়ে ২৪টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হলো। দেশে এখন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৫টি। প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নেই, অথচ আরও ১১টি নতুন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর আগে একসঙ্গে এতগুলো মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়ার কোনো নজির নেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব এ খবর শুনে প্রশ্ন করেন, ‘এতগুলো মেডিকেল কলেজ চালানোর মতো শিক্ষক কোথায়?’ তিনি বলেন, ‘অবকাঠামো ও অন্যান্য শর্ত পূরণ করার পর এগুলো অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে বলে মনে হয় না। আসলে বাণিজ্যিক কারণে এত মেডিকেল কলেজ করা হচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতেই শিক্ষকসংকট প্রকট। দু-একটি বাদ দিলে দেশের ৫৪টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষকসংকট আছে। মাত্র ১০ জন শিক্ষক দিয়েও মেডিকেল কলেজ চলছে।

প্রতিবছর ভর্তির সময় হলে মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা বলছেন, বিনিয়োগের বড় অংশটি তোলা হয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ফি আদায় করে। গত বছর কোনো কোনো মেডিকেল কলেজে ঘোষিত ভর্তি ফি ছিল ১৬ লাখ টাকা। ভর্তি পরীক্ষায় মাত্র ১০ নম্বর পেয়েও বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির নজির আছে।

গতকাল সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে মুঠোফোনে স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন বলেন, ‘মেডিকেল কলেজগুলোকে প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

নতুন অনুমোদন পাওয়া ১১ কলেজগুলো হচ্ছে ১. আদ্-দ্বীন-বসুন্ধরা মেডিকেল কলেজ (আকিজ ও বসুন্ধরা গ্রুপ) ২. শাহ মাখদুম মেডিকেল কলেজ (উদ্যোক্তা—একজন প্রতিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন আমলা) ৩. কেয়ার মেডিকেল কলেজ (উদ্যোক্তা—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মুয়াজ্জেম হোসেন) ৪. ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ (উদ্যোক্তা—ইউনাইটেড হাসপাতাল) ৫. ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ (আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতাল) ৬. রংপুর মেডিকেল কলেজ (কাসিয়ার উদ্দিন ফাউন্ডেশন) ৭. অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ (বর্তমান রাষ্ট্রপতি) ৮. খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ (পপুলার ফার্মা) ৯. স্কাইভিউ মেডিকেল কলেজ (সিলেট স্বাচিপের সভাপতি ইফতেশামুল হক চৌধুরী) ১০. পোর্ট সিটি মেডিকেল কলেজ (চট্টগ্রামের স্বাচিপ ও বিএমএর কয়েকজন নেতা) ও ১১. ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজের উদ্যোক্তার বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

এতগুলো মেডিকেল কলেজ কীভাবে অনুমোদন পেল, জানতে চাইলে সভায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এসব মেডিকেলের নিজস্ব জমি আছে এবং কলেজ করার মতো উপযুক্ত অবকাঠামো আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরপর প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষক, জনবল, বিভিন্ন বিভাগ ও ল্যাবরেটরি তৈরি করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে।

মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ছিল ৪১টি। ২০১০ সালে প্রথম তিনটি কলেজ অনুমোদন পায়। এরপর বিভিন্ন সময় আরও ১০টি অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার একসঙ্গে ১১টির অনুমোদন দেওয়া হলো। দেশে সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে ২২টি।

শীর্ষ খবর