জনস্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে : যোগাযোগমন্ত্রী

জনস্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে : যোগাযোগমন্ত্রী

‘ভোটের রাজনীতিতে অনেক সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তবে দেশের সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যানজট নিরসনে জনস্বার্থে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বুধবার দুপুরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে বিজিএমইএ’র প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠককালে তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা যানজটের অন্যতম কারণ। এটা বন্ধ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, সড়ক-মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা ও মালামাল সরাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে খুব বেশি বিলম্ব করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যেই পদ্মা সেতুতে বিনিয়োগে দেশি-বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে এক ধরণের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটা কেটে যাবে। ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়নের মেয়াদ ৬ মাস বাড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ সফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন)-এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বেলা ১২টায় যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। এ সময় যোগাযোগ সচিব এমএএন ছিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে বিজিএমইর পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।

এগুলো হচ্ছে- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ, গাজীপুর-বড়বাড়ী এলাকায় ওভার ব্রিজ স্থাপন, ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন, টঙ্গী-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে, আশুলিয়া-বাইপাল সড়ক চার লেনে উন্নীতকরনসহ ওভার ব্রিজ নির্মাণ এবং জিরাবো-জামগড়া পর্যন্ত ট্রাফিক জ্যাম কমাতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা।

বৈঠকে বিজিএমইএর দাবিসমূহের যৌক্তিকতা স্বীকার করে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, সব বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমি প্রত্যাশা বাড়াতে চাই না। আবার ফান্ড নেই বলে হতাশাও ছড়াতে চাই না।

তিনি বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ে ছয় লেনে উন্নীত করা এখনই সম্ভব নয়। তবে চার লেন এর কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০১৩ সালের মার্চের মধ্যেই এর কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে মামলার কারণে টঙ্গী-মংমনসিংহ রোডকে চার লেনে উন্নীত করার কাজ বাস্তবায়নে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। এছাড়া ফুট-ওভার ব্রিজ নির্মাণসহ বিজিএমইএর অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন মন্ত্রী।

প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, দেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু (কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী) ইতোমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ তিনটি সেতু আমাদের রক্ষা করতে হবে।

তিনি জানান, সেতুগুলো রক্ষায় ইতোমধ্যেই ওজন স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মেঘনা সেতুতে ৬টি ফেরি চালু করা হচ্ছে।

দেশের সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থের অপর্যাপ্ততা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি অর্থের অপচয় করা থাকে। যেখানে প্রয়োজন সেখানে অর্থ পাওয়া যায় না। অন্যদিকে অনেক অপ্রয়োজনীয় খাতে সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ ২২টি মোড় প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই এটি শেষ হবে।

এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সারাদেশে সচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়ক থেকে লাইসেন্সবিহীন নসিমন,করিমন, ইজি বাইক ধরণের যানবাহন বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ