চল্লিশের বেশি বয়স্ক এক পুরুষের সাথে মাত্র ৮ বছর বয়সে ইয়েমেনের ছোট কন্যা শিশুর সঙ্গে বিয়ে। মেয়ের তুলনায় পুরুষের বয়স পাঁচ গুন বেশি। আর এই বাল্যবিবাহের বলি হয়েই বাসর রাতেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে সেই ছোট মেয়েটি। নৃশংসতা এতোটাই চরম পর্যায়ে পৌছায় যে অভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণ থেকে আর বাচাঁনো সম্ভব হয়নি ছোট ৮ বছর বয়সী শিশু বধূটিকে।
নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে ইয়েমেনের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় হাজ্জা প্রদেশের মেইদি শহরে।
গত সপ্তাহের ৪০ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তিটির সঙ্গে বিয়ে হয় আট বছর বয়সী শিশু কন্যাটির।
দেশটির শীর্ষ স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থার কর্মী ওথম্যান বলেন, ‘বিয়ের প্রথম রাতে মিলনের পরে মেয়েটির রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপরে পরিবারের সদস্যরা মেয়েটিকে হাসপাতালে নিলেও, বাচাঁনো সম্ভব হয়নি।’
মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া কর্তৃপক্ষ এখনো মেয়েটির পরিবার ও স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি বলেও জানায় মানবাধিকার সংস্থা।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ঘটনাটির সত্যতা অস্বীকার করেছেন বলে ইন্ডিয়া টুডে’র খবরে প্রকাশ করা হয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। এছাড়া স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা বিষয়টি যেনো গণমাধ্যমে জানাজানি না হয় সেজন্যে সাংবাদিকদের সতর্ক করেন।
ইয়েমেনের অনেক দরিদ্র পরিবারই অল্প বয়সের মেয়েদের বোঝা মনে করেন। ফলে মেয়েদের লালন-পালনের খরচ বাচাঁনোর লক্ষ্যে এবং বিয়ে দিয়ে যৌতুক হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ উর্পাজনের লোভে অল্প বয়সেই বিয়ে দেন।
জানুয়ারিতে প্রকাশিত এ.ইউ.এন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েমেনের ২৪ মিলিয়ন জনগনের মধ্যে ১০ দশমিক ৫ মিলিয়নের বাস দারিদ্র সীমার নিচে। অপরদিকে ১৩ মিলিয়ন জনগনের পর্যাপ্ত নিরাপদ পানীয় ও পয়নিঃষ্কাসনের সুযোগ নেই।
এদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ডিসেম্বরে দেশটিতে আঠারো বছরের কম বয়স্ক যেকোনো মেয়ের বিয়ের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
এইচআরডব্লিউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ বছরের কম বয়সে ইয়েমেনের ১৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়। এছাড়া ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হয় ৫২ শতাংশ মেয়ের।