ডিসিসি ভাগ নিয়ে এরশাদের স্ট্যান্টবাজি

ডিসিসি ভাগ নিয়ে এরশাদের স্ট্যান্টবাজি

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ভাগের সিদ্ধান্তকে শুরুতে শর্ত সাপেক্ষে স্বাগত জানানোর কথা বললেও হঠাৎই ভোল পাল্টেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ক্ষমতায় গেলে ঢাকাকে আবার এক করার বুলি আওড়াতে শুরু করেছেন তিনি। ‘আন প্রেডিক্টেবল নেতা’ খ্যাত এরশাদের এ বক্তব্যকে অবশ্য ‘পলিটিক্যাল স্ট্যান্টবাজি’ বলেই মনে করছেন রাজনীতি-বোদ্ধারা।

গত ২৯ নভেম্বর জাতীয় সংসদে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে ডিসিসি উত্তর ও ডিসিসি দক্ষিণে ভাগ করা হলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ‘যদি জনগণের সেবার মান বাড়ে তাহলে জাতীয় পার্টি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে।’

এরপরেও একাধিক সভা সমাবেশে তিনি একই কথা বলেন। এমনকি তফসিল ঘোষণা না হলেও নির্বাচনে জাপার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে উভয় ডিসিসিতে মেয়র পদে জাপা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন তিনি।

ডিসিসি উত্তরে জাতীয় পার্টি মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল ও দক্ষিণে প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদকে জাপার মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেন অবসরপ্রাপ্ত এই সমরনায়ক।

বর্তমানে উভয় প্রার্থী ব্যানার, তোরণ ও পোস্টার দিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এমনকি প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ড ও মহল্লায় কর্মী সমাবেশ করে চলেছেন।

ডিসিসি দক্ষিণের প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদ অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে দু’ধাপ এগিয়ে ধানমন্ডিসহ কয়েকটি এলাকায় নির্বাচনী কার্যালয়ও উদ্বোধন করেছেন।

আজ বুধবার বিকেলেও রমনা থানা এলাকায় কর্মীসভা করেন তিনি। সেখানে তিনি জাপার ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করেন।

ডিসিসি নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জাপা প্রার্থীরা যখন নির্ঘুম রাত পার করছেন, ঠিক সেই সময়ে ২৮ জানুয়ারি ইমানুয়েল কমিউনিটি সেন্টারে তিস্তা লংমার্চ সফল করায় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে ক্ষমতায় গেলে ডিসিসিকে ফের এক করবেন বলে ঘোষণা দেন এরশাদ।

তার এ ঘোষণার পর জাপার নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘জাপার প্রার্থীরা যখন মাঠে সরব, তখন তার (এরশাদ) এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি।’

এ বক্তব্যেরই জের ধরে ডিসিসি দক্ষিণে জাপা প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘ডিসিসি ভাগের সিদ্ধান্ত জাতীয় পার্টি ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমরা এক স্বাগত জানাই নি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন হবে তাই একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমরা নির্বাচন করব। আগামীতে জাপা ক্ষমতায় এলে আবার ডিসিসিকে এক করা হবে।’

‘ডিসিসি ভাগ হওয়ায় জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে’ বলে মন্তব্য করে ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘সরকারের উচিত ছিলো ডিসিসি এক রেখে ৪ জন ডেপুটি মেয়র করা।’

জাপা ক্ষমতায় গেলে ৪ ডেপুটি মেয়রের পদ সৃষ্টি করবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে জনগণ এক দেখতে চায়। আর জাপা জনগণের দল। তাই ক্ষমতায় গেলে আমরা জনগণের দাবি বাস্তবায়ন করবো।’

রাজনীতি