খেলায় মজেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

খেলায় মজেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

আঙ্গুলের কড় গুণে বলে দেওয়া যাবে কতজন দর্শক খেলা দেখতে এসেছিলেন। দিন দিন সংখ্যাটা কমছেই। স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য গেট উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরও দর্শক নেই। গ্যালারির হাহাকারই খেলার প্রতিচ্ছবি। মাঠে আসাটাই অনেকের কাছে অনর্থক মনে হচ্ছে।

একপেশে খেলায় এর চেয়ে বেশি দর্শক আশা করাও বোকামি। আসলে দর্শকরা তো খেলায় নিজের দেশের প্রাধান্য দেখতে চান। সেখানে খেলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের স্পিন জুজুতে এখন তারা ভয় পায় না। উল্টো সেঞ্চুরি করে ভয় দেখায়। বোলারদেরকে বিমর্ষ করে দেয়।

ঢাকা টেস্টের শুরু থেকে এই হালচাল। আগে ব্যাট করে ৩৫৫ রান পায় কির্ক এডওয়ার্ডসের সেঞ্চুরিতে। বাংলাদেশকে ২৩১ রানে অল-আউট করে ১২৪ রানে লিডও নেয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ড্যারেন ব্রাভোর সেঞ্চুরিতে দিন শেষে তিন উইকেট ২০৭ রান। ব্রাভো এখনো অপরাজিত। আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান কির্ক এডওয়ার্ডসকে সোহরাওয়ার্দী শুভ বোল্ড না করলে সেঞ্চুরি করেই ফেলেছিলেন। ৮৬ রানে আউট হয়েছেন এডওয়ার্ডস। দুই ইনিংসের যোগ বিয়োগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৩১ রানে এগিয়ে। খেলার এখনো দুই দিন বাকি। চতুর্থ দিন এক থেকে দেড় সেশন ব্যাট করলেই রানের পাহাড়টা হিমালয়ের উচ্চতা পাবে।

মাঠের প্রতিচ্ছবি খেলোয়াড়দের চেহারাতেও প্রতিফলিত হচ্ছে। মন মরা ভাব। আশার কথা শোনাতে পারছেন না কেউ। আগের দিন (রোববার) সাকিব আল হাসান পর্যন্ত বলেছিলেন ৩৫০ রান হলে জবাব দেওয়া সম্ভব। এখন তিনিও চুপ। ক্যারিবিয় শিবির একেবারে বোবা বানিয়ে দিয়েছে তাদেরকে।

বলে টার্ন নেই। বাঁহাতের আঙ্গুলগুলো বোধশক্তি হারাতে বসেছে। ওভারের পর ওভার বল করে স্পিনাররা ক্লান্ত হয়ে উঠেছেন। একই ধরণের বল খেলে বোধহয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরাও বিরক্ত। তবুও খেলছেন বড় ইনিংসের আশা। টেস্ট জয়ের স্বপ্ন নিয়ে।

দর্শকদের কাছে ফিরে যাই। যে কয়জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন, দলকে উজ্জীবিত করার মতো উপলক্ষ্য আসেনি। একবার সাকিব একটি দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছিলেন। তখন দর্শকরা ঘুম থেকে জেগে উঠেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত ক্যামেরায় ধরাপড়ে সাকিবের হাতে বল যাওয়ার আগেই মাটিতে গুত্তা খেয়েছে। সাকিবও তখন নিশ্চিত ছিলেন না বলে আউটের জন্য জোর দাবি করেননি।

বাংলাদেশের এই দুরবস্থার জন্য খানিকটা মিস ফিল্ডিংও দায়ী। ১১ রানের সময় সাকিবের বলে ক্যাচ তুলেছিলেন ব্রাভো, শাহরিয়ার নাফিস তালুবন্দী করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে আরেকবার গালিতে ইমরুল কায়েসের হাত ফসকে বেরিয়ে গেছেন। এবারও বোলার সাকিব আল হাসান। যা হওয়ার তাই হলো প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটা তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকলেন ব্রাভো।

অথচ খেলার তৃতীয় ইনিংসের শুরুটা কি দারুণ ছিলো। রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ দল। ক্রেগ বাফেটের উইকেট নাঈম ইসলাম ভেঙ্গে দিয়েছিলেন সরাসরি থ্রু তে। কিয়েরন পাওয়েলকে সাকিব আল হাসান যখন সাজঘরে ফেরত পাঠান, তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিলো ৩৩। সে সব গোলেমালে হয়ে গেছে। বাকি খেলাটা পরিকল্পিত।

জাতীয় কিউরেটর গামিনী ডি সিলভা যা বললেন, তাতে মনে হয় এরচেয়েও ভায়ানক বিপদ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। চতুর্থ দিন থেকে না কি উইকেটের চরিত্র বদলে যাবে। তাহলে তো দেবেন্দ্র বিশু কাল হয়ে আসবেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের জন্য। ভাগ্য বিধাতা ঢাকা টেস্টের ভাগ্য এমন করে রচনা করবেন ভাবা যায়নি।

খেলাধূলা শীর্ষ খবর