নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে বাধা তুলে নেওয়া হচ্ছে: ইসি

নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে বাধা তুলে নেওয়া হচ্ছে: ইসি

comisonরাজনৈতিক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি মাথায় রেখে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে চলমান রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে ইসি। এরই অংশ হিসেবে আচরণ বিধিমালায় এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে ইসির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসি কার্যালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, সংবিধানে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে, তার বাইরে যাওয়ার সুযোগ তাদের নেই। সংবিধান অনুসারেই নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি প্রস্তুত করতে হবে। আর এ কাজ সম্পন্ন করার জন্য বেশি সময়ও হাতে নেই। রাজনৈতিক কারণে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন এলে তখন প্রয়োজনে আচরণ বিধিমালা আবারও পরিবর্তন করা হবে। ইসি সচিবালয় থেকে তৈরি করা এ খসড়া প্রস্তাবটি এখন কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে সরকারের মন্ত্রীদের নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে বাধা তুলে নেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন। তবে সব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নন। দলীয় প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে অনধিক ২০ জনকে মনোনয়ন দিতে হবে।

বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনে সরকারের কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদাসম্পন্ন সরকারি সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তির নির্বাচনী প্রচারে বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। ইসি সচিবালয় থেকে গত রোববার নির্বাচন কমিশনারদের কাছে নতুন আচরণ বিধিমালার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কমিশন সচিবালয়ের এ প্রস্তাবনা কমিশনের পরামর্শ অনুসারেই প্রস্তুত করা হয়েছে।

ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, গত তিনটি জাতীয় সংসদ (সপ্তম, অষ্টম ও নবম) গঠিত হয়েছে অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। তখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিদায়ী সরকারের পুরো মন্ত্রিসভাকেই পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নিতে হতো। বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রিসভা কার্যকর থাকবে। ওই মন্ত্রিসভার সদস্যরাও নির্বাচনে অংশ নেবেন এবং প্রচারকার্য চালাবেন। কিন্তু বিদ্যমান আচরণ বিধিমালায় তাদের প্রচারকার্যে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

এ প্রস্তাব সম্পর্কে নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, সংবিধান অনুসারে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যই আচরণবিধিতে এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এটি না হলে বিরোধী দলের নেতারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারলেও সরকারি দলের অনেক নেতা তা পারবেন না। এ ছাড়া আচরণবিধিতে ‘নির্বাচনপূর্ব সময়’-এর সংজ্ঞায়ও সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আগের আচরণবিধিতে ‘নির্বাচনপূর্ব সময়’-এর সংজ্ঞায় বলা আছে, সংসদের মেয়াদোত্তীর্ণ বা সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত সময়। কিন্তু প্রস্তাবিত আচরণবিধিতে এ সময় হচ্ছে সংসদের মেয়াদ অবসান বা সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে এর পূর্ববর্তী ৯০ দিন হতে সংসদ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত।

বাংলাদেশ