কিরগিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী হিসেবে দাবি করেছেন মস্কোপন্থি সাবেক প্রধানমন্ত্রী আলমাজবেক আতামবায়েভ। সোমবার তিনি এ দাবি করেন। গত বছর এক গণ-আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রেসিডেন্ট কুরমান বাকিয়েভ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন কিছু পর্যবেক্ষক। একই অভিযোগ এনে পরাজিত প্রার্থীদের সমর্থকরা দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বিক্ষোভ করছে।
নির্বাচনে ৯৯ ভাগ ভোট পড়েছে এবং আলমাজবেক ৬৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। আলমাজবেকের দাবি সত্য হলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে আর দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের প্রয়োজন হবে না।
ভূমিবেষ্টিত মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিস্তান। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা অর্ধকোটির বেশি। ২০ বছর আগে স্বাধীনতা লাভ করলেও এ পর্যন্ত দেশটিতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘটনা ঘটেনি। গত বছর এপ্রিল মাসে এক রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন প্রেসিডেন্ট কুরমান বাকিয়েভ তারপর দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন রোজা ওতুনবায়েভা। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি দেশটিতে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন। সেদিক থেকে রোববারের নির্বাচন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা ভোট কারচুপি ও অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার অভিযোগ এনেছেন। এছাড়া পরাজিত বেশ কয়েকটি প্রার্থীর সমর্থকরা বিক্ষোভ করছে। ভোটের আগেই তারা বলেছিল, কোনো ধরনের অনিয়ম হলে নির্বাচন প্রথ্যাখ্যান করা হবে। নির্বাচনে ১৬ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, আতামবায়েভের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ১৫ শতাংশের নিচে ভোট পেয়েছেন। তবে জাতীয়তাবাদী এ দল দুটির পক্ষে শক্ত সমর্থন রয়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর। ২০১০ সালের জুনে এখানেই জাতিগত দাঙ্গায় কয়েশ লোক নিহত হন।
খবরে বলা হয়েছে, তৃতীয় স্থানে থাকা প্রার্থী কামচিবেক তাশিয়েভের অন্তত ২০০ সমর্থক জালালাবাদ শহরে বিক্ষোভ করছে এবং শহরের প্রধান রাস্তাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া দক্ষিণের বৃহত্তম ওশ শহরেও তার কিছু সমর্থক বিক্ষোভ করছে।
দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী আদাখান মধুমারোভ (তিনবারের জাতীয় বিলিয়ার্ড চ্যাম্পিয়ন) ও তাশিয়েভ দুই জনই আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। সেইসঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শন অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।
রাজধানী বিশকেকে সাংবাদিকদের সামনে তাশিয়েভ বলেন, “নতুন নির্বাচন না দেয়া পর্যন্ত আমি শান্ত হব না। জনগণ প্রস্তুত আছে, শিগগির তাদের অবস্থা আপনারা দেখতে পারবেন।”