পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নে মালয়েশিয়া আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সোমবার সেতু ভবনে মালয়েশিয়া সরকারের বিশেষ দূত এইচ ই দাতো সেরি এস সামি ভেলির নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ আগ্রহ ব্যক্ত করে।
বৈঠক শেষে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
সাংবাদিকদের জানান, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যাপারে মালয়েশিয়া সরকার গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদের প্রস্তাব পেয়েছি। কিছু প্রক্রিয়া আছে। বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবো।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলেও জানান তিনি।
বৈঠকে সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২৯০ কোটি ডলার ব্যয়সাপেক্ষ পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংক ১২০ কোটি ডলার দেওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি করলেও পরে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন স্থগিত করে। তাদের এ অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশনও। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে যথাসময়ে অচলাবস্থার অবসান না হলে পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়া বা অন্য যেকোনো দেশের সঙ্গেই চুক্তি করা হবে।’
পদ্মা সেতু নির্মাণে ‘কুয়াশা’ কেটে যাবে দাবি করে কাদের বলেন, ‘আমি দৃঢ়তার সঙ্গেই বলছি, আগামী এক বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে চায় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে আর কোন কোন শর্ত থাকবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কথা হয়নি।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংকসহ অন্য দাতা সংস্থাগুলো ঋণের সময়সীমা ছয় মাস বাড়িয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাকি সময়সীমার মধ্যে তারা পদ্মা সেতু করার শর্ত পূরণ করতে পারলে এবং সেতু নির্মাণে সত্যিকার অর্থে আশ্বাস দিতে পারলে তাদের সঙ্গে বৈরিতা করবো কেন?’
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের পাশাপাশি এডিবি ৬১ কোটি, জাইকা ৪০ কোটি এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ১৪ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। বাকি অর্থের যোগান দেবে সরকার।
বিশ্ব ব্যাংকের নাম উল্লেখ না করে গত ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি ঋণদাতা সংস্থা পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির যে অভিযোগ তুলেছে, তার প্রমাণ দিতে না পারলে তাদের অর্থ সরকার নেবে না।