নোংরা অশোভন রুচিহীন

নোংরা অশোভন রুচিহীন

সংসদ টিভিতে তাদের নোংরা, অশোভন, রুচিহীন কথাবার্তা শুনে লাখ লাখ মানুষ স্তম্ভিত।

এ কোন ভাষায় কথা বলছেন আমাদের আইনপ্রণেতারা। সংসদ টিভিতে তাদের নোংরা, অশোভন, রুচিহীন কথাবার্তা শুনে লাখ লাখ মানুষ স্তম্ভিত।

একি মন্তব্য, না খিস্তিখেউড়! বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধী দল ও সরকারি দলের কয়েকজন সাংসদকে কত বেশি খারাপ ভাষায় কথা বলতে পারেন তারই প্রতিযোগিতা চলছে। শুরু করেছিলেন বিরোধী দলের তিন নারী সাংসদ। এই মিছিলে এখন শামিল সরকারি দলের কোনো কোনো সদস্য। গতকাল রাতে সংসদে বাজেট আলোচনাকালে রুচিহীন কথাবার্তার প্রতিযোগিতা চলে। এসব ‘অমিয় বচনে’র অনেকটাই সংবাদপত্রে প্রকাশ করাও সম্ভব নয়। গতকাল খালেদা জিয়ার পিতৃপরিচয় নিয়েও নোংরা মন্তব্য করেন সরকার দলীয় এক সাংসদ।

 

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার পিতৃপরিচয় নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সংসদের অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেছে বিএনপি। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সদস্য অপু উকিল বক্তব্য দেওয়ার সময় রাত ৮টা ৫৪ মিনিটে বিএনপি সদস্যরা ওয়াকআউট করেন। ওয়াকআউট করার সময় বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম নিয়ে বিষোদ্গার করতে করতে বের হয়ে যান। এর আগে বিএনপির সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি অর্থমন্ত্রীকে ‘ক্লাউন’ এবং তথ্যমন্ত্রীকে ‘মস্তিষ্ক বিকৃত ভাড়াটে মন্ত্রী’ বলে উল্লেখ করেন। আগের দিন বিএনপির এমপি শাম্মী আখতার তার আলোচনায় অসংসদীয়-অশোভনীয় শব্দ ব্যবহার করেন। সংসদে অশোভন আক্রমণ শুরু হয়েছিল বিএনপির সদস্য রেহানা আক্তার রানুর অশোভন বক্তব্যের মাধ্যমে।

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শুরুতেই বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। বিএনপির ওয়াকআউটের ঘটনা ঘটে অপু উকিল বক্তব্য দেওয়ার সময়। তার ঠিক আগেই বক্তব্য দেন বিএনপির নিলোফার চৌধুরী মনি। তিনি বেশ কিছু বইয়ের উদৃব্দতি দিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক প্রমাণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তিনি অর্থমন্ত্রীকে সেরা ক্লাউন এবং তথ্যমন্ত্রীকে মস্তিষ্ক বিকৃত ভাড়াটে মন্ত্রী বলে উল্লেখ করেন। এ সময় সরকারি দলের সদস্যরা চিৎকার করে প্রতিবাদ জানান। নিলোফার চৌধুরী মনির বক্তব্য শেষ হওয়ার পরপরই আলোচনার জন্য স্পিকার আহ্বান জানান অপু উকিলকে। অপু উকিল বক্তব্যের শুরুতেই পাকিস্তানি এক জেনারেলের লেখা একটি বইয়ের উদৃব্দতি দিয়ে খালেদা জিয়ার মা-বাবার পরিচয় এবং দার্জিলিংয়ে এক ইহুদি চা বাগানে তাদের প্রথম জীবনের চিত্র তুলে ধরেন এবং বেশ কিছু আপত্তিকর ও নোংরা মন্তব্য করেন। অপু উকিল বলেন, খালেদা জিয়ার চেহারার সঙ্গেও ‘ইহুদি বাবা’র মিল রয়েছে। তিনি খালেদা জিয়ার পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার এ ধরনের মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দলের সদস্যরা প্রতিবাদ জানান এবং সংসদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর কাছে অপু উকিলের মাইক বন্ধ করার দাবি জানান। এ সময় ডেপুটি স্পিকার নির্বিকার থাকলে বিএনপির সদস্যরা ওয়াকআউট করেন। এ সময় নিলোফার মনি ও শাম্মী আখতার বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়েও অশ্লীল স্লোগান দেন।

বিএনপির সদস্যরা ওয়াকআউট করার পর অপু উকিল বলেন, বিরোধী দলের সদস্যরা একের পর এক সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সিনিয়র সদস্যদের নামে অশ্লীল আক্রমণ, রুচিহীন আক্রমণ করছেন। কুৎসিত মিথ্যাচার করছেন। এখন তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার অপ্রকাশিত ইতিহাস তুলে ধরতেই তারা সহ্য করতে পারছেন না। ওয়াকআউটের পর বিএনপির সদস্যরা আর ফেরেননি।

 

অন্যান্য বাংলাদেশ রাজনীতি শীর্ষ খবর