শাপলা চত্বরের ঘটনার ব্যাপারে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানিয়েছেন আল্লামা শফী।
গত ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনার বিষয়ে বুধবার জাতীয় সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা আহমদ শফী।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আল্লামা শফী একথা বলেছেন।
শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া হেফাজতকর্মীদের সরাতে গত ৫ মে মধ্যরাতে ১০ হাজারের বেশি পুলিশ-র্যাব-বিজিবি সদস্যের যৌথবাহিনী অভিযান চালায়। সেসময় সেখানে ‘গণহত্যা’ চালানো হয় বলে দাবি করেছিল প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, অভিযানে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার হয়নি।
ওই অভিযানের ঘটনা তদন্তে ‘স্বাধীন’ কমিশন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।
এ বিষয়ে বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে রাজধানীর মতিঝিলে গত ৫ মে রাতে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সরানোর ঘটনা নিয়ে দেশের গ্রামে-গ্রামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
মতিঝিলে যৌথবাহিনীর অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেই দিন কোনো গোলাগুলির ঘটনাই ঘটেনি। মাদ্রাসা থেকে বাচ্চাদের নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের বাসে তুলে দেওয়া হয়েছে। কোন মাদ্রাসায় হারিয়ে যাওয়া ছাত্রের তালিকা নেই।”
বিবৃতিতে হেফাজত প্রধান বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদে তার বক্তব্যে শাপলা চত্বরে ৫ মে রাতে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি, হেফাজতের কর্মীরা গায়ে রং মেখে রাস্তায় পড়েছিল এবং পুলিশ টান দেয়ার পর লাশ দৌড় মারলো- ইত্যাদি যেসব মন্তব্য করেছেন তা পুরোপুরি অসত্য, চরম বিভ্রান্তিকর এবং জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
তিনি বলেন, “দেশের সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এমন চরম দায়িত্বহীন মন্তব্যে আমি বিস্মিত, হতবাক। তার মন্তব্যে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানোর ভাষাও আমি হারিয়ে ফেলেছি।”
আল্লামা শফী বলেন, “কোনো রকমের তদন্ত ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর মতো দায়িত্বপূর্ণ আসনে বসে তিনি কীভাবে এদেশের আলেম-ওলামাদের ওপর ইতিহাসের একটি বর্বরোচিত কলংকজনক ঘটনার ব্যাপারে এভাবে সংসদে দাঁড়িয়ে ডাহা অসত্য কথা বলতে পারলেন!”
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ঘটনার একদিন পরই যেখানে পত্রপত্রিকায় অসংখ্য আহত-নিহত ব্যক্তির ছবি এসেছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে পুলিশের নির্বিচারে গুলি করে মানুষ মারার ভিডিও চিত্র প্রচারিত হয়েছে এবং অসংখ্য ভিডিও চিত্র এখনো সংরক্ষিত আছে, সেখানে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কীভাবে একটি সম্পূর্ণ সত্য ঘটনাকে অস্বীকার করতে পারলেন!”