অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে সরকারের নানামুখী পরিকল্পনা রয়েছে।
গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের শেয়ার ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ জন্য গ্রামীণ ব্যাংকে ১৩ কোটি ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার এ অর্থ ছাড় করা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এর ফলে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের শেয়ার কমে ৭৫ শতাংশে দাঁড়াবে।
সূত্র জানায়, গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ অনুযায়ী এর পরিশোধিত মূলধন ছিল তিন কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। ১৯৮৩ সালে মূল অধ্যাদেশ অনুযায়ী সরকারের শেয়ার ছিল ৬০ শতাংশ।
অপরদিকে গ্রামীণ ব্যাংক সদস্যদের শেয়ার ছিল ৪০ শতাংশ। ১৯৮৬ সালে অধ্যাদেশের সংশোধনীতে গ্রামীণ ব্যাংক সদস্যদের শেয়ার বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা হয়। সে ক্ষেত্রে সরকারের শেয়ার দাঁড়ায় ২৫ শতাংশ কিন্তু সরকার নিজের শেয়ার গ্রহণ না করায় অর্থাৎ মূলধনের নির্দিষ্ট অংশ পরিশোধ না করায় বাস্তবে শেয়ার দাঁড়ায় মাত্র ৩ শতাংশ। অপরদিকে গ্রামীণ ব্যাংক সদস্যদের শেয়ার দাঁড়ায় ৯৭ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে সরকারের নানামুখী পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংকটির ওপর সরকারের কর্তৃত্ব বাড়াতে ব্যাংকটিতে মোট শেয়ারের বড় একটি অংশ সরকারের রাখা প্রয়োজন। অন্যথায় ব্যাংকটির ওপর কর্তৃত্ব আরোপ করার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে।
গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন গ্রামীণ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছে। এ পর্যায়ে গ্রামীণ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কাঠামো বিষয়ে অভিজ্ঞ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য কমিশন একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে।
আগামী ২ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য এই কর্মশালায় অর্থমন্ত্রী ছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কর্মশালায় আমন্ত্রণকারীদের কাছে গ্রামীণ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ রূপ কী হতে পারে তার একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে।
এতে গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের শেয়ার বাড়িয়ে ৫১ শতাংশ নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া কমিশন মনে করে গ্রামীণ ব্যাংককে বর্তমান অবস্থায় আর রাখা ঠিক হবে না। একে ভেঙে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মতো করা উচিত।
গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অপসারণ নিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। এরই এক পর্যায়ে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ ধরে রাখার জন্য আদালতের আশ্রয় নেন। আদালতের রায় ড. ইউনূসের বিপক্ষে গেলে সরকারের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়ে যায়।