বিশ্বব্যাংকের দেওয়া পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রতিবেদন স্বতঃসিদ্ধ নয় বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিদায়ী চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। বিশ্বব্যাংকের উচিত ছিল আরও কিছুটা সময় নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের কার্যালয় ভবনে আয়োজিত গোলাম রহমানের বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা দাবি করেন।
গোলাম রহমান বলেন, বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে সব সময়ই একজন ব্যক্তির (সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন) নাম বলেছে। তাঁকে এজাহারভুক্ত আসামি করার জন্য চাপ দিয়েছে। কিন্তু দুদকের করা এফআইআরে এ নামটি সন্দেহভাজন তালিকায় রাখা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, কাউকে আসামি করতে হলে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ দরকার। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে যে ৩২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাঁদের কেউ ওই ভদ্রলোকের নাম বলেননি।
দুদকের চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমানকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক চাপ দিয়েছিল। পরে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মশিউর রহমানের নাম নেই।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে দুদকের তদন্ত এখনো চলছে। তাই বিশ্বব্যাংকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে আরও সময় নেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন গোলাম রহমান।
পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতি হয়নি দাবি করে গোলাম রহমান বলেন, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিন পদ্মা সেতুর পরামর্শকের কাজ পেতে ঘুষে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছে।
সেই প্রলোভনে কেউ পা দিতে পারেন। তবে একটি মন্ত্রণালয়ের সবাই প্রলোভনে পা দিয়েছে, এটা কতটুকু যৌক্তিক?
দুদক কার্যালয়ে চেয়ারম্যন হিসাবে এটাই ছিল সাংবাদিকদের সঙ্গে গোলাম রহমানের বিদায়ী সাক্ষাৎ। শেষ বেলায় তিনি স্বীকার করেন, আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে গত ৪ বছরে কমিশন কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।
“চার বছর আগে আমি যখন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন বলেছিলাম, দুদক একটা টুথলেস টাইগার। এই চার বছরে পরিস্থিতির খুব অগ্রগতি হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। আইনগত সীমাবদ্ধতা ও বিচারব্যাবস্থার দীর্ঘসূত্রতা দুদকের সাফল্যের পথে অনেক বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।