মওদুদ সাহেব এতো ঘাটের পানি খেয়েছেন যে আর পানি হজম হবে না: প্রধানমন্ত্রী

মওদুদ সাহেব এতো ঘাটের পানি খেয়েছেন যে আর পানি হজম হবে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ করে বলেছেন, তিনি এতো ঘাটের পানি খেয়েছেন যে আর পানি হজম হবে না। তবে লেখেন এক আর বলেন আরেক। ঘরে বলেন এক কথা আর বাইরে বলেন আরেক কথা।

বুধবার নবম জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনে মওদুদ আহমদের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অনির্ধিরিত এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে তো আমি আজ থেকে চিনি না। তিনি যে কত পাতে খেয়েছেন তা সবার জানা। উনি জিয়ার সরকারে ছিলেন, পরে এরশাদের সঙ্গে এখন আবার বিএনপির সঙ্গে।

এর আগে মওদুদ আহমদ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমি পয়েন্ট অব অর্ডারে তিস্তা চুক্তি নিয়ে বক্তব্য দিলে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু কোনো বিধি না মেনে বিষয়টির কোনো উত্তর না দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, আজও তোফায়েল সাহেব কোন বিধিতে বক্তব্য দিলেন জানিনা। আসলে এগুলো তারা প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতেই বলে থাকেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, আপনাকে খুশি করতে তারা বক্তব্য দিচ্ছে, আপনি তাদের পোর্টফোলিও দিয়ে দেন।

মওদুদ আহমদের এমন বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওদুদ সাহেব তাদের পোর্টফোলিও চাচ্ছেন নাকি নিজের জন্য চাচ্ছেন বোঝা বড় দায়। গ্রামের একটা গল্প আছে। এক লোক বিভিন্ন জায়গায় দাওয়াত খেতে গিয়ে বলেন, উনার পাতে ঝোল দিন, উনার পাতে ঝোল দিন। আসলে ঝোল যে তারই প্রয়োজন এটা কিন্তু বোঝা যায়।

সংসদে বিএনপি সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওনারা আমার ছেলের বউকেও বাদ দিয়ে কথা বলেননি। আমার ছেলের বউ নাকি ইহুদি। তারা এটাও জানে না আমার ছেলের বউ ইহুদি না খ্রিস্টান। আর খ্রিস্টান হলো আমাদের আহলে কিতাব। আমাদের প্রখ্যাত আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের মেয়ের জামাই হচ্ছেন ইহুদি। আর বিএনপি তারটা আমার ছেলের বউয়ের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।

হেফাজতের সমাবেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দল বলে বেড়াচ্ছে এক লাখ ২০ হাজার গুলি খরচ করে নাকি ৫ মে হেফাজতের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। যদি এক লাখ গুলি খরচ করা হয় তাহলে তো মতিঝিলের ভবনগুলোতে গুলির চিহ্ন থাকতো। কয়েক হাজার মানুষ আহত হতো। সেদিনকার ঘটনা তো টিভিতে লাইভ প্রচার করা হয়েছে। যদি হত্যাকান্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটতো তাহলে তো আমরা দেখতাম।

সংসদে প্রধানমন্ত্রী তার নিজের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, আমি বলেছিলাম আপনারা তত্ত্বাবধায়ক তত্ত্বাবধায়ক করেন, তত্ত্বাবধায়ক চাইলে কোনো দিনই নির্বাচন হবে না। আমি বলেছি, এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক তো দুই বছর পর নির্বাচন দিয়েছিল কিন্তু আবার যদি তত্ত্বাবধায়ক আসে তাহলে কোনো দিনই নির্বাচন হবে না। আমার এ বক্তব্যটি বিকৃত করা হয়েছে। আর বলা হচ্ছে আমি নাকি বলেছি তত্ত্বাবধায়ক চাইলে নির্বাচন হবে না।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকতে মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি করে বিশাল সমুদ্রসীমা জয় করেছি। ভারতের সঙ্গেও এ বিরোধ নিষ্পত্তির পথে। যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলে ভারতের কাছ থেকে তারা এই সমুদ্রসীমা আদায় করতে ভুলে যাবেন। যেমনটি তাদের সময় তাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে ফারাক্কা চুক্তি নিয়ে কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ রাজনীতি শীর্ষ খবর