সিলেট আওয়ামী লীগ এখন সুরঞ্জিতময়। মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে ঘিরে চলছে সব হিসেব-নিকেশ। মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার সিলেটে সফরে আসার পর থেকেই তা দৃশ্যমান হয়ে উঠে। রেলস্টেশনে সুরঞ্জতি সেনকে অভ্যর্থনা, নগরীতে আওয়ামী লীগের জনসভার স্লোগান আর দিরাই ও ছাতকে সংবর্ধনার পর এবার সুনামগঞ্জে সংবর্ধনায় একই চিত্র। সব সভায় সিলেটের আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী থাকছেন। সঙ্গে থাকছেন তাদের সহস্রাধিক কর্মী।
আওয়ামীলীগ দলীয় সূত্র জানিয়েছে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি বিমুখ নেতারাই এখন ভিড় করছেন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দিকে। এ নিয়ে নয়া মেরুকরণের সুর বেজে উঠেছে। এছাড়া জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদবঞ্চনা ও ‘অবমূল্যায়নের’ কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া নেতাদের আচমকা সক্রিয়তাও জানান দিচ্ছিল এই মেরুকরণের।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এখন রেলমন্ত্রী সিলেটে আসলেই প্রভাবশালী কিছু দলীয় নেতাকর্মী তাকে ঘিরে রাখছেন। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মন্ত্রীর সঙ্গে। মন্ত্রী যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই তাদের শত শত কর্মীবাহিনীসহ হাজির হতে দেখা যাচ্ছে। সঙ্গী হওয়া এসব নেতৃবৃন্দ রেলমন্ত্রীকে খুশি করতে প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন জায়গায় সাঁটাচ্ছেন পোস্টার।
হুমাযূন রশীদ স্কয়ার থেকে শুরু করে কিনব্রিজ, নগরীর জনবহুল প্রায় প্রতিটি স্থানেই টানানো রয়েছে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছবি সংবলিত প্যানাফ্লেকস । এতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে রেল মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেওয়ায় আওয়া মীলীগ, ছাত্রলীগ পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
নগরীর কোর্ট পয়েন্টে একটি বিশালাকারের বিলবোর্ডে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, হাসিনা তনয় জয় ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছবি। বিষয় অভিন্ন। সুরঞ্জিতকে মন্ত্রী বানানোর জন্য অভিনন্দন।
অভিনন্দন জানিয়েছেন মহানগর যুবলীগের সভাপতি জগদীশ চন্দ্র দাশ ও সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। এছাড়া একই বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা বিধান কুমার সাহার পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা, ছিনতাইসহ বিভিন্ন মামলার আসামি জনৈক ছাত্রলীগ নেতাও একইভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে।
এদিকে, শনিবারের সুনামগঞ্জের সংবর্ধনায় যোগ দিতে সুনামগঞ্জের ৫ আসনের ছাতক দোয়ারা এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের নেতৃত্বে পাঁচ শতাধিক গাড়ির বহরসহ সংবর্ধনাস্থলে যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমপির একান্ত সচিব।
এতে সিলেট আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেক নেতাকর্মী গাড়ীর বহরসহ যোগ হয়েছেন তাতে। নগরীর বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও যোগ হচ্ছেন তাতে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সুরঞ্জিত সেনের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবন ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে ঘিরে নেতাকর্মীদের উৎসাহও ছিল বেশি।’