ঢাকা দক্ষিণ সিটির একমাত্র হাজারীবাগ এলাকার সড়কে কোন ফুটপাত নেই। পূর্বে, সরু এ সড়কের উপর নিয়মিত বসছে হকাররা। ফলে এলাকাবাসীর চলাচলে পোহাতে হচ্ছে মহাদুর্ভোগ।
এনিয়ে স্থানীয়রা ফুটপাত নির্মাণের জন্য বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
হাজারীবাগ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশে উন্মুক্ত নালাগুলো ট্যানারির বর্জ্যে প্রায় সময় ভরাট হয়ে থাকে। নালার নোংরা পানি উপচে রাস্তার খানিকটা অংশে চলে আসে। এতে পথচারীদের চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে।
স্থানীয়রা জানায়, বর্ষা মৌসুমে পানি নামার জায়গা না থাকায় রাস্তায় এসব বর্জ্য উঠে আসে। ফুটপাত না থাকায় তখন এ বর্জ্যের মধ্যে দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। এছাড়া, এ এলাকার সড়কে সারাদিন রিকশা, সিএনজি ও টেম্পোর চাপ লেগেই থাকে। এর মধ্য দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীকে।
এরপর আবার এ সরু রাস্তার দুই পাশে সারাদিন হকারের দখলে থাকে। সব মিলিয়ে মহাদুর্ভোগে হাজারীবাগবাসী।
কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে ফুটপাত না থাকায় এ সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় রিকশা, সিএনজি অটোরিকশাসহ অন্যন্য যানবাহনের আঘাতে পথচারীরা প্রায়ই আহত হচ্ছে।
সূত্রমতে, ১৯৯৭ সালে ধানমন্ডি, লালবাগ ও মোহাম্মদপুর এলাকার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় হাজারীবাগ থানা। অথচ আজ পর্যন্ত এলাকাটিতে পথচারীদের চলাচলের জন্য কোনো ফুটপাত স্থাপন করা হয়নি। এলাকাটিতে রাস্তাঘাটের কিছুটা উন্নয়ন হলেও তাতে সন্তুষ্ট নয় এলাকাবাসী। এছাড়া সরু রাস্তার দুই পাশ হকারদের দখলে থাকায় যানবাহন চলাচলের পর পথচারীদের হাঁটার কোনো জায়গা থাকে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকায় চামড়ার কারখানার পাশাপাশি দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৪৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আরো আছে ২৮টি পোশাক কারখানা ও ১১টি কাঁচাবাজার। সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ৩ দশমিক ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাটিতে বাস করে এক লাখ ৯০ হাজার ৬৪০ জন । অথচ তাদের হাঁটার জন্য কোনো ফুটপাত নেই। ফলে শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন অর্ধলক্ষাধিক পথচারী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ নিয়ে আমাদের কাছে একাধিকবার অভিযোগ এসেছে। এ সমস্যা শুধু হাজারীবাগ নয়, পুরান ঢাকার আরো কয়েকটি এলাকায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ফুটপাত নির্মাণ করতে হলে রাস্তা আরো প্রশস্ত করতে হবে। এতে ঘরবাড়িও ভাঙা ছাড়া কোন পথ নেই। এ ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর সহযোগিতার চেয়ে প্রতিরোধ করার আশঙ্কাই বেশি থাকে। তাই সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এখানে ফুটপাত করা সম্ভব হচ্ছে না। তার পরও বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় আছে।