সিলেটে জামানের বাসায় আরিফ একযুগের দ্বন্দ্বের অবসান

সিলেটে জামানের বাসায় আরিফ একযুগের দ্বন্দ্বের অবসান

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে এক হলেন আরিফুল হক চৌধুরী ও এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান। আর এই এক হওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের দীর্ঘ একযুগের দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোটের সমর্থিত প্রার্থী। আর এডভোকেট জামান ছিলেন এবারের নির্বাচনে বিএনপি’র সমর্থন প্রত্যাশী প্রার্থী। নির্বাচনে মনোয়নপত্র প্রত্যাহারের একদিন আগে ঢাকায় ডেকে নিয়ে বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আরিফকে সমর্থন দেয়ার পর এডভোকেট জামান তার মনোয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। তবে ভোটের মাঠে জামান অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করেন। অবশেষে আরিফুল হক চৌধুরী নিজে থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করায় এই দ্বন্দ্বের মিটমাট হলো। দ্বন্দ্বের শুরু হয়েছিল একযুগ আগে। বিগত জোট সরকারের সময় অতি ক্ষমতাধর আরিফুল হকের অত্যাচারে জর্জরিত হয়েছিলেন সিলেট বিএনপি’র তরুণ নেতা এডভোকেট জামান। এমনকি পুলিশ পাঠিয়ে জামান ও তার পরিবারকে অপদস্থ করা হয়েছিল। সেই থেকে আরিফ ও জামান দুই মেরুর বাসিন্দা। একই দল করলেও এই দুই নেতা একসঙ্গে বসতে পারেননি। একত্রে চালাতে পারেননি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। উল্টো স্রোতে রাজনীতি করে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নিখোঁজ ইলিয়াসের হাত ধরে জামান আবার সিলেটের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এবং ইলিয়াস আলীর গুমের ঘটনার পর জামান ক্রমেই রাজপথের লড়াকু নেতায় পরিণত হন। এবারের সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দলের সমর্থন নিয়ে নাসিম হোসাইন, এডভোকেট জামান ও আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকি শুরুতেই আরিফকে টক্কর দেন। তবে চেয়ারপারসনের মত আরিফের পক্ষে যাওয়ার পরও ইলিয়াস বলয়ের নেতারা নীরব থাকেন। শেষ মূহূর্তে আরিফ বৃহস্পতিবার ঢাকার বাসায় ইলিয়াস আলীর স্ত্রী লুনার সঙ্গে দেখা করার পর শুক্রবার বিকাল পৌনে ৫ টার দিকে ছুটে যান এডভোকেট শামসুজ্জামান জামানের শিবগঞ্জ সবুজবাগস্থ বাসায়। আরিফুল হক এডভোকেট জামানের বাসায় যাওয়ার আগেই সেখানে জড়ো হন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজারও নেতা-কর্মী। আরিফুল হক বাসায় গিয়ে সোজা চলে যান এডভোকেট জামানের মায়ের কাছে। তিনি জামানের মায়ের পায়ে ধরে সালাম করেন এবং অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চান। একই সঙ্গে আরিফ নির্বাচনে তার জন্য দোয়া চান। এরপর ড্রইং রুমে এসে জামানকে জড়িয়ে ধরেন আরিফ। বেশ কিছুক্ষণ কোলাকুলির পর দুইজন একসঙ্গে বেরিয়ে আসেন বাসার উঠোনে। উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় আরিফ বলেন, ‘অতীতে আমি অনেক ভুল করেছি। অনেকের মনে কষ্ট দিয়েছি। এর জন্য সবার কাছে মাফ চাচ্ছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন এবং টেলিভিশনের পক্ষে কাজ করবেন।’ তিনি আরও বলেন, আমি আগামীতে ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার আন্দোলনে সক্রিয় হবো। ইলিয়াস আলী ফিরে না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’ পরে এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান বলেন, ‘দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে আমরা একসঙ্গে নির্বাচন, একসঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাবো। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করাসহ সব আন্দোলন দুর্বার গতিতে চালিয়ে যাবো।’ তাদের দু’জনের বক্তব্যের পর অধ্যাপক মকসুদ আলী ঘোষণা দেন, ‘আজ শনিবার টিলাগড় পয়েন্ট থেকে তারা টেলিভিশনের পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করবেন।

অন্যান্য জেলা সংবাদ বাংলাদেশ