হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির দিনে অগ্নিসংযোগে বায়তুল মোকাররম চত্বরের ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩৩ জন হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল তার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন তিনি। এসময় ৬ জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকেও সহায়তার অর্থ তুলে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন দেখে এসব মুক্তিযোদ্ধাকে পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক সহায়তাদানের সিদ্ধান্ত নেন। প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে ২ লাখ করে টাকা দেয়া হয় এবং ভবিষ্যতে আরও দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনে এ ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। আর্থিক সহায়তা গ্রহণকারীরা হচ্ছেন- রাজবাড়ীর হালিমা বেগম, নীলফামারীর আফিজউদ্দীন, পঞ্চগড়ের এম শামসুল হক, কুষ্টিয়ার হায়দার আলী, সুনামগঞ্জের সমির উদ্দিন ও কুমিল্লার মনু মিয়া।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, ৩৩৩ জন হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে তাদের ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার চেক দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, হকারদের যে পরিমাণ সহায়তা দেয়া হলো তা তাদের ক্ষতির তুলনায় খুবই অল্প। এটা তাদেরকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রতীকী সহায়তা। প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উস্কানিতে হেফাজতে ইসলাম ৫ই মে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও এত বেশি পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর নজির নেই। এ ধরনের নৈরাজ্যের নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। মন্ত্রিসভার সদস্যবর্গ, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং ব্যবসায়ী ও হকার্স নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সাভারের ভবন ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অনুদান গ্রহণ: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে গতকাল আরও অনেক ব্যক্তি ও সংগঠন অনুদান দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার তেজগাঁও কার্যালয়ে এসব অনুদান গ্রহণ করেন। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ও ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন তাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন এই তহবিলে দান করেন। এছাড়া, ২৬টি সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেন। দাতারা হচ্ছেন- বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বিএডিসি, বাংলাদেশ পুলিশ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়, পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বিএডিসি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা এসোসিয়েশন, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বিয়াম ফাউন্ডেশন স্কুল ও কলেজ, বেসরকারিকরণ কমিশন, আরডিআরএস বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্ট সেন্টার, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন, গোল্ডম্যান সফটওয়্যার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের গভর্নররা উপস্থিত ছিলেন।