নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী দেওয়া হবেনা। এ বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত! তবে র্যাব-পুলিশ দিয়ে শক্ত নিরাপত্তা ও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে। এটি সরকারের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত। কমনওয়েলথ সম্মেলন উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই ধারনা পাওয়া গেছে।
সুত্রগুলো বলেছে, সরকারের শীর্ষ মহলের কাছে তথ্য হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সেখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ডা সেলিনা হায়াৎ আইভি জিতবেন। কমপক্ষে ২০-২৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হলেও জিতবেন ডা আইভি। সে কারনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলেও আইভি বা তার সমর্থক দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দলের প্রার্থী শামীম ওসমানকে হাইকমান্ড থেকে যে কোন কারচুপি বা অনিয়মের চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। শামীম ওসমানের ঘাঁটি এলাকাগুলোর দিকে সর্বোচ্চ নজরদারি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে র্যাব-পুলিশকে। যা নির্বাচনের দিন দেখা যাবে।
উল্লেখ্য ৩০ অক্টোবর দেশের নতুন সিটি কর্পোরেশন নারায়ণগঞ্জ সিটির প্রথম নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুসারে ২৮ অক্টোবর সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকাটিতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা থাকলেও তা হয়নি। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা। শুক্রবার রাতে এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভও হয়। সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখে পার্থে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরকারিদলের নেতাদের যোগাযোগ চেষ্টার খবর বেরিয়েছে মিডিয়ায়।
পার্থে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বলা হয় নারায়ণগঞ্জের সব পরিস্থিতি অবহিত আছেন। বলা হয়, পুরো বিষয়টিই প্রধানমন্ত্রীর এক্সপেরিমেন্টের অংশ। প্রধানমন্ত্রী এক্সপেরিমেন্ট ভালোবাসেন। নারায়ণগঞ্জে তার এক্সপেরিমেন্টের বিষয়টি হলো সেখানে এমন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাতে প্রতীয়মান হয় যে দলীয় সরকারের অধীনে সেনাবাহিনী ছাড়াই নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এ ব্যাপারে র্যাব-পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও র্যাব সদস্য দেওয়া হবে। কিন্তু সেনাবাহিনী নয়।
সূত্রগুলো বলেছে, ব্যক্তিগত কিছু কৃতজ্ঞতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শামীম ওসমানকে দলীয় মনোনয়ন দিলেও অপর প্রার্থী ডা সেলিনা হায়াৎ আইভি’র প্রতিও তিনি যথেষ্ট দূর্বল। দলীয় মনোনয়ন ছাড়াই নির্বাচনে আইভি’র অনঢ় ভূমিকা আর তৃণমূল পর্যায়ে ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা-জনপ্রিয়তা নিয়ে নির্বাচনী দৌড়ে তার ঈর্ষণীয় বিশেষ ভালো অবস্থান সৃষ্টির গোয়েন্দা রিপোর্টে হাইকমান্ড বিশেষ অভিভূত। সে কারণে এমন একটি বিরূপ প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও আইভির ভিন্নরকম বিজয় উদযাপনের অপেক্ষা করা হচ্ছে।