বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতেই শুরু হয়েছে সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন। বছরের শুরুর এই অধিবেশনে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।
৫৫ দিন পর বুধবার বিকাল ৩টায় স্পিকার আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। এই অধিবেশন চলবে আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত। সংসদের একাদশ অধিবেশন শেষ হয়েছিল গত ৩০ নভেম্বর।
অধিবেশনের শুরুর দিনে প্রথমেই সভাপতিমণ্ডলী মনোনীত করা হয়। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। এর ওপর আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা।
এর পরই পাঁচটি অধ্যাদেশ উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ।
অধ্যাদেশগুলো হচ্ছে- মানবপাচার দমন অধ্যাদেশ, সরকারি কর্মকর্তাদের বয়সসীমা বাড়ানোর অধ্যাদেশ, অপরাধ সম্পর্কিত পারস্পরিক তথ্য বিনিময় অধ্যাদেশ, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ও সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ। এগুলো সংসদে পাস হলে আইনে পরিণত হবে।
কিছু সময় বিরতি দিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় পুনরায় অধিবেশনের শুরুতেই ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এই ভাষণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে অধিবেশনের প্রথম দিন।
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশন কক্ষে রয়েছেন। এছাড়াও রয়েছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। দলীয় চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে দেখা না গেলেও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা রয়েছেন অধিবেশনে।
নবনির্বাচিত পাঁচ নারী সংসদ সদস্য বেবী মওদুদ, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, পিনু খান, হাসিনা মান্নান ও ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পীও অধিবেশনে রয়েছেন। তারা এই পথম সংসদ অধিবেশনে যোগ দিলেন।
সংসদের এই অধিবেশনে কার্যদিবস থাকছে ২৭টি। সেক্ষেত্রে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এ অধিবেশনে যোগ না দিলেও সদস্যপদ হারানোর ঝুঁকিতে পড়ছেন না।
আইন অনুযায়ী, টানা ৯০ দিন সংসদে অনুপস্থিত থাকলে সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে বিরোধী দলের সদস্যরা গড়ে ৫৩ দিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এর আগে ৭৪ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর গত বছরের ১৫ মার্চ সংসদ অধিবেশনে ফিরেছিলেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা।
তবে বর্তমান অধিবেশনের মেয়াদ বেড়ে যদি ৩৭ কার্যদিবস অতিক্রম করে, তবে সংসদ সদস্যপদ হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা।
বর্তমান সংসদের গত ১১টি অধিবেশনের মধ্যে ৭টিতেই অনুপস্থিত বিরোধী দলের সদস্যরা। সর্বশেষ ২০১১ সালের ২৪ মার্চ তারা সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন।
সংসদে বিরোধী দলকে ফিরে আসতে মঙ্গলবারও অনুরোধ জানান প্রধান হুইপ আব্দুস শহীদ।
তবে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বুধবার সকালেও বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালে সংবিধান সংশোধনের বিল সরকারি দল আনলে তারা সংসদ অধিবেশনে যোগ দেবেন।
স্পিকার আবদুল হামিদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।