বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের আমলে এ পর্যন্ত ছয়বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। আরেকবার দাম বাড়ানো প্রক্রিয়াধীন আছে। তেলের দাম বিশ্ব বাজারে স্থিতিশীল; আর গ্যাস আমাদের নিজস্ব সম্পদ। এরপরও এসব জিনিসের দাম বাড়ানো হলে জনগণের ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানো হয়। রোববার জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে যখন বিরোধী দলগুলো হরতাল করছে ঠিক তখনই কমিটি এ সুপারিশ করলো। বৈঠকে বিরোধী দলের সদস্য মাহবুব উদ্দিন খোকন অনুপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শুরুতেই কমিটির সদস্যরা অনির্ধারিত এই বিষয়ে আলোচনা উত্থাপন করেন। সরকারি দলের প্রভাবশালী তিন সদস্যই সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। তারা বলেন, যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমছে সেখানে সরকারের এই শেষ বছরে মূল্য বাড়ানোর কোন গ্রহণযোগ্য যুক্তি থাকতে পারে না। এতে সরকার জনগণের আস্থা হারাচ্ছে। জবাবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জ্বালানি তেলে সরকারকে বিপুল অংকের টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। আর ভর্তুকি কি পরিমাণ দেয়া হয় সেই সিদ্ধান্ত নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে এ বিষয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কিছু করণীয় নেই। কমিটি সভাপতি সুবিদ আলী ভূঁঁইয়া বলেন, কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাসের দাম আর যাতে না বাড়ানো হয় সেজন্য সুপারিশ করেছি। তিনি বলেন, কমিটির পক্ষ থেকে বিদ্যমান অবৈধ গ্যাস সংযোগ বৈধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানও অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়ার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনারও সুপারিশ করেছে কমিটি। গত বৃহস্পতিবার সবধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। এটি ছিল বর্তমান সরকারের আমলে ষষ্ঠবার। অন্যদিকে বিদ্যুতের দামও খুব শিগগিরই বাড়ানো হচ্ছে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে গণ-শুনানি শেষ করেছে বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এদিকে বৈঠকে গ্যাস ব্যবহার ও নীতিমালা দ্রুত চূড়ান্ত করার সুপারিশ করা হয়। এ সময় বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর জানান, শুধু ঢাকাতেই এক লাখেরও বেশি গ্যাসের অবৈধ সংযোগ রয়েছে। বৈঠকে কমিটি সদস্য আবদুল মতিন খসরু, মো. ইসরাফিল আলম ও শেখ ফজলে নূর তাপস অংশ নেন।