যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ত্বরান্বিত এবং বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আগামী ২৪ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মর্সচি ঘোষণা করেছে ১৪ দল।সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ১৪ দলের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এর আগে ২২ ডিসেম্বর একই ইস্যুতে ৭ জানুয়ারি মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ১৪ দল।
এদিকে, বৈঠক সূত্র জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ১৪ দলের শরিক দলের নেতারা বৈঠকে প্রশ্ন করেন। এসময় তারা জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবি জানান এবং আগামীতে বিদ্যুতের দাম আর না বাড়ানের প্রস্তাব করেন।
বৈঠক সূত্র আরও জানায়, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে বলেন, “হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম কেন বাড়ানো হলো? জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি। দাম কমাতে হবে। সরকার ইচ্ছে করলে কমানো সম্ভব।”
তিনি এসময় ভারতে জ্বালানির দাম বাড়ানোর পর বিরোধীদের দাবির মুখে আবার দাম কমানো হয় বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “আগামীতে বিদ্যুতের দাম যাতে আর না বাড়ে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যাবে না।”
জ্বালানি তেলেল দাম কমানোর দাবিতে রাশেদ খান মেনন তাদের কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। আমরা কর্মসূচি পালন করবো।”
সূত্র জানায়, দাম কমানোর ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতারা কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে দাম বাড়ানোর বিরোধিতা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “বিরুদ্ধে কথা বলার, কর্মসূচি পালন করার অধিকার আছে। আপনারা বলতে পারেন।”
রাশেদ খান মেননের কথার সঙ্গে ১৪ দলের অন্যান্য নেতারাও একমত পোষণ করে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর প্রস্তাব সমর্থন করেন।
এ সময় গণতন্ত্রী পর্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম বলেন, “জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে জনদুর্ভোগ বাড়বে। সরকারের যে সময় বাকি আছে, এই সময় জনদুর্ভোগ বাড়ে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। জনদুর্ভোগ কমাতে হবে।”
বৈঠকে জাসদ নেতা নাজমুল হক প্রধান অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে সংসদে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বলে সূত্র বাংলানিউজকে জানায়।
এছাড়া বৈঠকে আগামী ২৪ জানুয়ারি মানববন্ধনের আগে কিছু জেলায় গণসংযোগ কর্মসূচি ঠিক করার জন্য আমির হোসেন আমু, মোহাম্মদ নাসিম, রাশেদ খান মেনন ও শরিফ নুরুল আম্বিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তারা গণসংযোগ কর্মসূচি ও এই কর্মসূচিতে কে কোন জেলায় যাবেন সেটা ঠিক করবেন।
সৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, “আওয়ামী লীগের কাউন্সিলসহ বিভিন্ন কারণে পূর্বঘোষিত ৭ জানুয়ারির মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগতি করা হয়। ২৪ জানুয়ারি এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কিছু জেলা সফর করবেন।
এ সময় সরকারের ৪ বছরের সফলতা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করার চক্রান্ত জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে।
এসময় বিএনপি নেতা রফিকুল হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আমির হোসেন আমু বলেন, “সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে। সরকারই এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মতিয়া চৌধুরী, মো. নাসিম, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির নুরুর রহমান সেলিম, জাসদের শরিফ আম্বিয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজিদুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির আনিসুর রহমান মল্লিক, কামরুল আহসান, জাসদের নাজমুল হক প্রধান প্রমুখ।