ঢাকার সাভারে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ এবং তার ভিডিও চিত্র ধারণের অভিযোগে তার বান্ধবীসহ চার জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
গত ২৫ নভেম্বর সাভার পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার রাতে সাভার মডেল থানায় মামলা (নম্বর ৭) দায়ের করেন ওই ছাত্রীর মা।
মেয়েটিকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রাতেই সাভারের ব্যাংক কলোনি এবং মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থেকে পুলিশ সূচী ওরফে লিজা (১৮), শান্তা মরিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রায়হান (২০), সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র মহিদুল রহমান (২০) এবং রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা সুজনকে (২৫) গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাহেদ ওরফে রাজু (২২), রাজধানীর আজিমপুরের শাহীন, সিঙ্গাইরের কাংশার শামীম (২৪), লুৎফর (২৩), দানেশ (৩৫), মাসুদ (২৪) এবং ধল্লা এলাকার আলীম (২৫)।
প্রায় একমাস আগে টাঙ্গাইলের মধুপুরে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড়ের মধ্যে এ ধর্ষণের কথা প্রকাশ পেল।
সাভার মডেল থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে গ্রেপ্তারদের শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া এবং এজাহারভুক্ত পলাতক আসামিরা বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের শিক্ষার্থী। তারা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম মামলার বরাত দিয়ে, গত ২৫ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে ডিগ্রির প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে (১৮) পরীক্ষা আছে বলে ডেকে নিয়ে যায় তারই সহপাঠী বান্ধবী সূচী ওরফে লিজা।
পথে লিজা জানান- সাভারে তার ফুফু অসুস্থ এবং তাদের আগে সেখানে যেতে হবে। এই বলে লিজা তার বান্ধবীকে পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির একটি মেসে ঢুকিয়ে দিয়ে চলে যান।
এরপর ওই মেসে থাকা আসামিদের মধ্যে জাহেদ ওরফে রাজু তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় তার চিৎকার শোনা না যাওয়ার জন্য তারা ফুল ভলিউমে কম্পিটারে গান ছেড়ে দেয়।
আসামি শাহীন ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ডিজিটাল ক্যামেরায় ধারণ করে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
পরে তারা ঘটনা প্রকাশ না করা এবং ধর্ষণের দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে থানা বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে একটি গাড়িতে তুলে দেয়।
লজ্জা ও ভয়ে এতদিন তারা ঘটনাটি কাউকে জানায়নি।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, ঘটনার সপ্তাহখানেক পর আসামি দানেশ মেয়েটির মাকে ফোন করে মেয়েকে ধর্ষণের দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করে।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী দানেশ। আর সূচী ওরফে লিজা তাদের সহায়তা করেছে।
গত ৭ ডিসেম্বর এক বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে টাঙ্গাইলের মধুপুরে এক স্কুলছাত্রীকে তার এক বান্ধবী একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আটক রেখে তিন দিন ধর্ষণ করা হয় তাকে।
বর্তমানে ওই স্কুলছাত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পাঁচ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।