আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ‘পরিকল্পিত’ বলে মনে করে পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর তদন্ত কমিটি।
ওই কারখানার কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ‘পরিকল্পনায়’ জড়িত উল্লেখ করে তাদের আইনের আওতায় আনারও সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।
বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিও ওই অগ্নিকাণ্ডকে ‘নাশকতা’ উল্লেখ করে, যদিও তারা জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি।
গত ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে শতাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির জন্য তাজরীন ফ্যাশনসের মালিক দেলওয়ার হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানটির আরো নয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া নাশকতার জন্য দয়ীদের চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি করতে বলে তদন্ত কমিটি।
বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করে সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, “ঘটনার সময় উপস্থিত এবং ঘটনায় আহত শ্রমিক কর্মচারীসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলে যে সাক্ষ্য প্রমাণ আমরা নিয়েছি, তা বিশ্লেষণ করে একটি পরিকল্পিত ঘটনার ইংগিত পাওয়া গেছে, যা আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু তদন্ত করা প্রয়োজন।”
গত ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার ওই কারখানায় আগুন লেগে অন্তত ১১১ জন নিহত হন। পরদিন বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ১১ সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যার দায়িত্ব দেয়া হয় সংগঠনের সহ সভাপতি (অর্থ) এস এম মান্নান কচিকে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাজরীন কারখানার নিচতলায় যদি অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত গুদাম না থাকত, অথবা গুদামের চারপাশ যদি দেয়াল দিয়ে ঘেরা থাকত এবং ভবনের প্রতিটি সিঁড়ি যদি কারখানার বাইরে এসে শেষ হতো, তাহলে হতাহতের সংখ্যা এতো বেশি হতো না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিও ওই ভবনের নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, “এ ঘটনার জন্য মালিকপক্ষেরও চরম অবহেলা ছিল, যার দায় মালিকপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।”
তাজরীনের ঘটনা খতিয়ে দেখতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, প্রশাসন, ফায়ার ব্রিগেড ও পুলিশের পক্ষ থেকেও আলাদা কমিটি করা হয়।