বিশ্ব ব্যাংকের চূড়ান্ত ইঙ্গিত এখনো না মিললেও এই সরকারের মেয়াদেই পদ্মা সেতু নির্মাণে জোরালো আশাবাদ প্রকাশ করেছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, অর্থায়ন যেভাবেই হোক বর্তমান সরকারের মেয়াদেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
সোমবার মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে সাংবাদিকরা পদ্মা সেতু প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতুর প্রদীপ বছরের শেষ দিনেও জ্বলছে, আগামী বছরেও জ্বলবে।”
সেতু নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতি শতভাগ শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকার জাতিকে হতাশ করতে চায় না, দেশের মানুষের দাবি পদ্মা সেতু নির্মাণ, কীভাবে হল তা বড় বিষয় নয়, অর্থায়ন যেভাবেই হোক সরকারের বাকি মেয়াদকালে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা হবে।”
পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর বিশ্ব ব্যাংকের শর্ত পূরণে সৈয়দ আবুল হোসেন যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলে ওই দায়িত্বে আসেন ওবায়দুল কাদের।
পদ্মা প্রকল্প নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের গত মে মাসে বলেছিলেন, “পদ্মা সেতু একটি আম। বাংলাদেশের লোক আম চায়। আমটা দিতে পারব কি না, সেটাই বড় কথা।”
পদ্মা প্রকল্প নিয়ে কথা বলা এড়িয়ে চলা কাদের সোমবারও বলেন, “বিষয়টি ‘সেনসেটিভ’। দাতাদের বিষয়টি দেখছে অর্থ মন্ত্রণালয় ও ইআরডি (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ)। অর্থ মন্ত্রণালয় যেদিন টাকা দেবে, সেদিন থেকেই সেতুর কাজ শুরু হবে।”
বর্তমান সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ২৯১ কোটি ডলারের পদ্মা প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার দেয়ার কথা থাকলেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তারা এই বছরের জুন মাসে অর্থায়ন বাতিল করেছিল।
তবে সরকারের নানামুখী তৎপরতায় গত সেপ্টেম্বরে ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।
বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে এই প্রকল্পে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
ওই ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গত ১৭ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে।
তবে বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তদন্ত পর্যবেক্ষণে বিশ্ব ব্যাংকের তিন সদস্যের প্যানেলের প্রতিবেদনের ওপরই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে বলে জানানো হয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, তারা মামলার এজহারের অনুলিপি বিশ্ব ব্যাংকের সদর দপ্তর এবং ঢাকা কার্যালয়ে ইতোমধ্যে পাঠিয়েছে।