‘বিজয়ের এই দিনে লোকমান তোমায় মনে পড়ে’, ‘খুনি রাজুর গালে গালে জুতা মারো তালে তালে’ বা ‘খুনিদের আস্তানা নরসিংদীতে হবে না’। এ স্লোগানগুলোর একটির চেয়ে অপরটির সময় ব্যবধান মাত্র কয়েক মিনিট। জনপ্রিয় নেতাকে হত্যার ক্ষোভ জানাতে একটুও দেরি হয়নি নরসিংদী পৌরবাসীর।
তাইতো বিজয়ের মহা উৎসব পরিণত হলো ক্ষোভের মিছিলে।
নরসিংদী পৌরসভার উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সাবেক মেয়র লোকমান হোসেনের ছোট ভাই কামরুজ্জামান কামরুল।
বৃহস্পতিবার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই জেলা পরিষদে স্থাপিত নির্বাচনী কন্ট্রোলরুমের সামনে জড়ো হতে থাকেন লোকমান ও কামরুলের হাজার হাজার সমর্থক।
সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে যখন কামরুলের বিজয় সুনিশ্চিত হয়ে যায় তখন জনতার উত্তাল তরঙ্গে উচ্ছ্বাসের ঢেউ ওঠে। বাঁধ না মানা এ উচ্ছ্বাস আরো ফুলে ফেপে ওঠে যখন বিজয়ীর বেশে রিটার্নিং অফিসারের মনিটরিং কক্ষ থেকে জেলা পরিষদের প্রধান ফটকে বেরিয়ে আসেন কামরুল।
এ সময় হাজারো কন্ঠে বিজয়ের নানা স্লোগান সমস্বরে উচ্চারিত হয়। অনেক কষ্টে সমর্থকদের কিছুটা শান্ত করে সে স্থান ত্যাগ করেন কামরুল।
এর পরই জনতার বিজয় উল্লাস রুপ নেয় ক্ষোভের উত্তাল সমুদ্রে। লোকমানের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুকে দায়ী করে তার বিচার দাবি করেন নরসিংদীবাসী।
ক্ষোভের আগুন ঝরিয়ে তারা বলেন, মন্ত্রীর ইন্ধনে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। তার অনুসারীরা এখনও লোকমানের পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। লোকমান হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান তারা।
এর আগে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই পৌরবাসী নিজেদের সব কাজ বাদ দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ কারণে বিকেলের মধ্যেই শহরের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।
রিটানিং অফিসারের ঘোষিত নির্বাচনের পুরো ফলাফল নেওয়া পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ সেখানেই অবস্থান করেন।
নির্বাচনে কামরুলের বিজয়ের পর আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন নিহত লোকমানের স্ত্রী নুসরাত তামান্না বুবলি।
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বামী হত্যার বিচার চান।