মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধীদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভবিষ্যত নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে বৃহস্পতিবার ৬৭তম বিএমএ লং কোর্স এবং ৩৮তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের ক্যাডেটদের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান বলে বার্তা সংস্থা বাসস জানায়।
কমিশন পাওয়া ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব। তাই তোমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সবসময় ধারণ এবং দেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের অপকর্মের ব্যাপারে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে।”
“দেশসেবার মহান ব্রত নিয়ে তোমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছো। চৌকস, আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে তোমরা আজ বৃহত্তর কর্মজীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছো। আমি আশা করি, তোমরা সকলেই জনগণের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হবে”, যোগ করেন তিনি।
এ সময় মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিকবৃন্দ এবং নতুন কমিশন পাওয়া ক্যাডেটদের অভিভাবকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। তিনি সেরা ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এ বছর ১০ ফিলিস্তিনি ক্যাডেটসহ মোট ৮৫ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেছে। প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব লাভের জন্য তারিক জুবায়েরকে ‘সোর্ড অব অনার’ প্রদান করা হয়। সামরিক বিষয়ে অসামান্য কৃতিত্ব অর্জনের জন্য হাবিবুল্লাহ খান সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক লাভ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বাধিক শান্তিরক্ষী পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।সরকার দেশ থেকে সন্ত্রাসীবাদ ও জঙ্গীবাদ নির্মূলের মাধ্যমে দেশকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ রাষ্ট্রের অপবাদ থেকে মুক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ বাহিনী মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরি সুনামের সাথে পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ, ঢাকার জলাবদ্ধতা ও যানযট নিরসন, হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রস্তুতে অসামান্য দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছে।
অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ, গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিটি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের মানুষ এখন সুখে-শান্তিতে আছে। কিন্তু একটি গোষ্ঠীর তা সহ্য হচ্ছে না। তাই জনগণের শান্তি বিঘ্নিত করতে তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।”