সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এম. আমীরুল ইসলাম বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী না করে শুধু তত্ত্বাবধায়ক খুঁজলেই নিরাপদ সমাধান হবে না। ‘মানি না, মানবো না’ বললে রুল অব ল’ হবে না। কারণ, অতীতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় সমাধান হয়নি। তাই, এ বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে হবে।
তিনি বলেন, “দেশে এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি। আবার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেননি এমন লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। একই সঙ্গে আইন ভাঙ্গেননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন।”
তিনি আরও বলেন, “পুরো বাংলাদেশটাই এখন মানবাধিকার হাসপাতাল হয়ে গেছে। তাই, প্রতি ঘরে ঘরে মানবাধিকার ও আইনের শাসনে সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।”
সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মানবাধিকার সংগঠন ‘আমাদের আইন’ আয়োজিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার এম. আমীরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “আজ দলবাজির জায়গা নেই। যদি দেশকে বাঁচাতে হয়, তাহলে প্রতিটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।”
“বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের মতো এমন চাবুক আমাদের বিবেকে খুব কমই পড়েছে!” এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মানবতার এত বড় অপমান এর আগে আর কয়টা হয়েছে?”
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “চিকিৎসাও এখন আওয়ামী লীগ চিকিৎসা-বিএনপি চিকিৎসা হয়ে গেছে। দেশ বড় ক্রাইসিসের (সংকটের) মধ্যে আছে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ এটা মানবে না, আর বিএনপি হয়ত খুশি হবে। কিন্তু, দেশকে বাঁচাতে হলে ‘থার্ড পার্টি’ বের করতে হবে। কারণ, আপোসের কোনো জায়গাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর এ জন্যই সেনানিবাসের অনুষ্ঠানে দুই নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া) দেখা হয়নি।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, “সংবিধানেই অনেক খারাপ ও মানবতাবিরোধী আইন আছে।”
উদাহরণ হিসেবে ৭২-এর সংবিধানে আর্টিকেল ৪৪-এ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়মুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একই সংবিধানে দ্বিতীয় সংশোধনী (৭৩)-এ ৬ মাস আটকের স্কোপ রাখা হয়। শাসকরা একের পর এক কালো আইন করে গেছেন। এখানে সামরিক আর গণতান্ত্রিক কেউ কম-বেশি নন।”
আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘আমাদের আইন’-এর সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. রফিউদ্দিন।