যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের এলিমেন্টারি স্কুলের হত্যাকাণ্ডের পরও অস্ত্র রাখার পক্ষের গোষ্ঠীগুলো অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন করার বিরোধিতা করছে । মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা উদ্যোগ নিলেও রিপাবলিকান শিবির থেকে বিরোধিতা আসছে।
নাগরিকদের জন্য অস্ত্রকে অবাধ করার পক্ষে যেসব গোষ্ঠী সেগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল রাইফেলস এসোসিয়েশন (এনআরএ) অন্যতম। এ গোষ্ঠী অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন করার ঘোর বিরোধী। এনআরএ’র প্রধান ওয়াইনে লাপিয়েরে বলেন, “বন্দুক একটি যন্ত্র। সমস্যার করে অপরাধীরা। আর অপরাধীরা (বিচার) ব্যবস্থার বাইরে অপরাধ করে।”
রোববার এনবিসির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করিনা এটি (অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) কাজ করবে এবং আমরা এতে সমর্থন দিচ্ছি না।”
শুক্রবার দেশজুড়ে প্রতিটি স্কুলে সশস্ত্র প্রহরী নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন লাপিয়েরে। সাধারণ অস্ত্র থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন গোলাবারুদ সমৃদ্ধ অস্ত্রের ওপর যেকোন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করেন তিনি।
এক ডেমোক্রেট সিনেটর অস্ত্র রাখার অবাধ অধিকার নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেন, “ অস্ত্রের কথা না তুলে স্কুলে হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধের চেষ্টা চালানো সিগারেটের প্রসঙ্গ বাদ রেখে ফুসফুস ক্যান্সার প্রতিরোধ করার মতো।”
আরেক ডেমোক্রেট সিনেটর কেন কনরাড লাপিয়েরের স্কুলে অস্ত্রধারী প্রহরী রাখার প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছেন । রোববার ফক্স নিউজের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “স্কুলে অস্ত্রধারী প্রহরী রেখে এমন গণহারে গুলি করে হত্যা ঠেকানো যাবে না।”
স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলের গুলির ঘটনার পর অস্ত্র রাখার পক্ষের আইনপ্রণেতারা বলেছিলেন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে তারা বিবেচনা করবে। কিন্তু রিপাবলিকান সিনেটর জন বারাসো বলেন, “দ্বিতীয় সংশোধনীতে উল্লেখিত অধিকারের বিলোপ সমাধান হতে পারেনা।”
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের এরকম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার বাস্তব সমাধান আমাদের দরকার। আমি নিশ্চিত যে ওয়াশিংটনে আরেকটি আইন পাস করে বাস্তব সমাধান আসবে না।”
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, “আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জাতীয় আলোচনা সেকেলে হয়ে গেছে।” অস্ত্র সহিসংতা প্রতিরোধে একটি কেন্দ্রীয় কমিশনের প্রধান হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়োগ দিয়েছেন ওবামা। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তি মালিকানায় ২০ থেকে ৩০ কোটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে এক বন্দুকধারীর গুলিতে ২০ শিশুসহ ২৮ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে হামলাকারী ও তার মা-ও রয়েছে। এটি কানেকটিকাটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এবং দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় স্কুল-হত্যাকাণ্ড।