সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা জনসম্মুখে প্রকাশ করার মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে মনে করেন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “এ দেশে ক্যু কিংবা এ ধরনের পরিকল্পনা বহুবার হয়েছে। কিন্তু কখনোই জনগণের সামনে তা প্রকাশিত হয়নি। এই প্রথম সামরিক বাহিনী জনগণের সামনে তা প্রকাশ করলো।”
“এর মাধ্যমে দেশে-বিদেশে সামরিক বাহিনী এবং সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন ‘ধর্মান্ধ’ কর্মকর্তা স¤প্রতি বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার’ প্রয়াস চালায়, যা সেনাবাহিনীর ঐকান্তিক চেষ্টায় প্রতিহত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সামরিক বাহিনীর আভ্যন্তরীণ বিষয় জনসম্মুখে প্রকাশ করার ঘটনা বিরল।
যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতেই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মহাজোট সরকারকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র হচ্ছে- এমন দাবি করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত বলেন, “দেশ দুই ভাগে বিভাজন হয়ে যাচ্ছে। একটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থাশীল শক্তি এবং অপরটি মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি। এর প্রতিচ্ছবি প্রশাসনের সর্বত্র প্রতিফলিত হচ্ছে।”
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি জামায়াতে ইসলামী দেশকে ‘অস্থিতিশীল’ করতে চাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সেনাবাহিনীতে এই ব্যর্থ অভ্যুত্থান পরিকল্পনায় বিএনপি-জামায়াত জোটেরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুনঞ্জিত।
তিনি বলেন, বলেন, “খালেদা জিয়া গুম, হত্যাসহ নানা উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলছেন। জামায়াতকর্মীরা পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে। গ্যাসগ্রেনেড ছুড়ছে- এগুলো কোন ধরনের গণতান্ত্রিক রাজনীতির মধ্যে পড়ে?”
রেলমন্ত্রীর মতে, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ, সাংবিধানিক স্বাধিকার এবং গণতান্ত্রিক চেতনায় আস্থাশীল। আর এর মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করেছে, গণতান্ত্রিক সরকারের মূল শক্তি হলো জনগণ।
শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু একাডেমী এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে ধ্বংস করার জন্য একটি মহল সবসময় সক্রিয়। সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ, তারা বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদি শক্তিকে প্রতিহত করা গেছে।”
বাংলাদেশি নির্যাতন
রাজশাহী সীমান্তে হাবিবুর রহমান নামে এক বাংলাদেশি যুবকের ওপর ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী-বিএসএফের নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
স¤প্রতি ওই নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশের পর বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয় আট বিএসএফ জওয়ানকে।
বিএসএফের এই আচরণকে ‘অমানবিক ও অসহনীয়’ উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, “বিএসএফের এই ঘটনা আর ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে নেই। বাংলাদেশ তো বটেই, ভারতের মানবাধিকার সচেতন সকল মানুষ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।”