পদ্মাসেতু দুর্নীতি: আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান, দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পদ্মাসেতু দুর্নীতি: আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান, দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পদ্মাসেতুর পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ চার আসামিকে গ্রেফতার করতে অভিযানে নেমেছে দুদকের বিশেষ টিম।

বুধবার সকালে এ অভিযান শুরু হয়। চার আসামির বাসায় অভিযান চালালেও তাদের পায়নি এ টিম। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আসামিরা মোবাইলফোন ট্র্যাকিংয়ে আছেন। যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন।

বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন অভিযানে থাকা দুদকের একাধিক কর্মকর্তা।

বিশেষ এ টিমের নেতৃত্বে থাকা দুদকের স্কোয়াড্রন লিডার মো: তাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “আসামিদের আইনের কাছে সোপর্দ করতে গ্রেফতার অভিযান চলছে। যে কোনো সময় আসামিরা গ্রেফতার হতে পারেন।”

জানা গেছে, আসামিদের গ্রেফতার করতে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইন শৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা ইউনিট এ জন্য কাজ করছে।

মামলার এক নম্বর আসামি মোশাররফের ধানমন্ডির ৩ নম্বর সড়কের বাসাটি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। অন্য আসামিদের বাসাও নজরদারিতে রয়েছে।

দুদকের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, “গ্রেফতার অভিযানের পাশাপাশি দুই সন্দেহভাজন বিশেষ নজরদারিতে রয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, পদ্মাসেতুর দুর্নীতির মামলার এজাহারে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীক `সন্দেহভাজন` হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। সাবেক এ দুই মন্ত্রীও বিশেষ নজরদারিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত সোমবার পদ্মাসেতুর দুর্নীতির মামলায় সাতজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এজাহারের বর্ণনায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে `সন্দেহভাজন` উল্লেখে করা হয়, আসামির তালিকা থেকে তারা বাদ পড়েন।

মামলায় মোট সাতজন আসামি। এর মধ্যে বাংলাদেশের চারজন হচ্ছেন-সাবেক সেতুসচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগে দরপত্র মূল্যায়নে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব কাজী মো: ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালট্যান্ট লিমিটেডের (ইপিসি) উপ-পরিচালক মো. মোস্তফা। কানাডিয়ান তিন বিদেশি আসামি হচ্ছেন এসএনসি লাভালিনের সাবেক পরিচালক (আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের) মোহাম্মদ ইসমাইল, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ সাহ ও কেভিন ওয়ালেস।

পলাতক আসামিদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা!
সাবেক সেতু সচিব মোশাররফসহ বাংলাদেশের চার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযানে নেমে তাদের বাসায় না পাওয়ায় দুদক এখন তাদের `পলাতক আসামি` হিসেবে দেখছে। আসামিরা যাতে দেশ থেকে পালাতে না পারেন সেজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থা।

দুদকের একটি সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাসেতু দুর্নীতি মামলার এজাহারে প্রত্যক্ষ আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সেতু কর্তৃপক্ষের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (নদী শাসন) কাজী মোঃ ফেরদৌস, সওজের (ব্রিজ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স ডিভিশন-৪) সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রিয়াজ আহমেদ জাবের ও এসএনসি লাভালিনের স্থানীয় এজেন্ট ইপিসির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সে জন্য তাদের বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দুদক থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপির কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১২
এডিএ/আ‌রআর

 

 

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য বাংলাদেশ শীর্ষ খবর