রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে এসে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের সমর্থন নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে নগরবাসী বিভ্রান্তিতে পড়েছেন।
ভোটের আগের দিন বুধবার মেয়র প্রার্থী আব্দুর রউফ মানিক দাবি করেছেন, তাকে সমর্থন দিয়েছেন এরশাদ।
মানিকের মতোই দল থেকে বহিষ্কৃত মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা তার এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে একথা বলা হচ্ছে।
জাতীয় পার্টির নেতারা অবশ্য বলছেন, এরশাদ কাউকে সমর্থন দেননি। তবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলু জানিয়েছেন, মানিক জাপা চেয়ারম্যানের কাছে দোয়া চেয়েছিলেন। দোয়া পেলেও সমর্থন পাননি তিনি।
এরশাদের নিজের এলাকা রংপুরে প্রথম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত কোনো মেয়র প্রার্থী নেই।
এই পদে এরশাদ দলের কেন্দ্রীয় নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গাকে সমর্থন দিলে বেঁকে বসেন মানিক ও মোস্তফা। তারা দুজনই প্রার্থী হন। দলীয় কোন্দলের কারণে এরশাদ ঘোষণা দেন, জাতীয় পার্টি কাউকে সমর্থন দেবে না।
দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন রাঙ্গাও। অন্যদিকে বহিষ্কার করা হয় মানিক ও মোস্তফাকে।
বুধবার বিকাল থেকে মানিক ও তার সমর্থকরা বলতে থাকেন, তিনি এরশাদের সমর্থন পেয়েছেন।
স্থানীয় একটি দৈনিক এই খবর প্রকাশ করে সান্ধ্যকালীন বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ওঠে, দেখা দেয় বিভ্রান্তিও।
জাতীয় পার্টির প্রবীণ নেতা সৈয়দ নুর আহমেদ টুলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেতারা বলছেন সমর্থন দেয়া হয়নি। আবার প্রার্থী সমর্থন পাওয়ার কথা বলে প্রচার চালাচ্ছেন। এতে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।”
মানিক সাংবাদিকদের বলেন, “এরশাদ সাহেবের হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছি। তিনি আমার নেতা, আজীবন নেতা হয়েই থাকবেন। সমর্থন চেয়েছি, তিনি সমর্থন দিয়েছেন।”
মানিকের এই প্রচারের পর জাপার সংসদ সদস্য ও এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ বিকালে তার বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে জানান, কোনো মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি জাপা।
“সমর্থন দেয়া নিয়ে যে দাবি করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,” বলেন তিনি।
বিভ্রান্ত না হতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান শাহরিয়ার আসিফ।
এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আব্দুর রউফ মানিক চেয়ারম্যানের কাছে দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়েছিলেন। চেয়ারম্যান তাকে আশীর্বাদ ও দোয়া দিয়েছেন, তবে সমর্থন দেননি।”
মেয়র প্রার্থী মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, “শেষ মুহূর্তে এসে সমর্থন দেয়া নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ঠিক করছেন না জাতীয় পার্টির নেতারা। এই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা জনৈক মেয়র প্রার্থীর উদ্দেশ্য সফল করার অপচেষ্টা করছেন।”
“জনগণের সমর্থন আমার সঙ্গে রয়েছে,” বলেন এই প্রার্থী; আওয়ামী লীগ নেতা শরফুদ্দিন আহমদ ঝন্টুর সঙ্গে তারই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে সাধারণ মানুষের ধারণা।
সমর্থন নিয়ে এই বিভ্রান্তির আগে মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা জানান, মানিক ও মোস্তফা কাউকে সমর্থন দেয়া হচ্ছে না।
ওই সংবাদ সম্মেলনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গাও ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে এক ভিডিও করফারেন্সে এরশাদও বলেন, মানিক কিংবা মোস্তফা কাউকে সমর্থন দেয়া হয়নি।