দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছবিসহ ভোটার তালিকায় ৬৯ লাখ ৩০ হাজার ৩০৩ জন নতুন ভোটার যোগ হয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এ তালিকায় তিন বছরে (২০১১ থেকে ২০১৩ সালের জানুয়ারি) আটারো বছর বয়সী ও বাদ পড়া ভোটাররাই হালনাগাদ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়াবে ৯ কোটি ২১ লাখের বেশি।
মঙ্গলবার বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এ বছর ১০ মার্চ থেকে হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়ে ৯ মাস ধরে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। পাঁচ সদস্যের ইসি পুনর্গঠনের পর নতুন ইসির এটিই প্রথম কাজ।
সিইসি জানান, রোববার সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ (নতুন অন্তর্ভূক্তি, মৃতদের বাদ, স্থানান্তর ও সংশোধন) কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এ সময় ৬৯ লাখ ৩০ হাজার ৩০৩ জন ভোটার নিবন্ধিত হন।
তিনি বলেন, “আগামী ২ জানুয়ারি এ তালিকার খসড়া প্রকাশ করা হবে। ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি, আপত্তি ও সংশোধন শেষে ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।”
গত মার্চ পর্যন্ত ভোটার তালিকায় ৮ কোটি ৫৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জন ভোটার ছিল। হালনাগাদের সময় ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৮৯৬ জন মৃত ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এ নিয়ে মোট ভোটার দাঁড়াবে ৯ কোটি ২১ লাখ ২২ হাজার ৩৩২ জন।
কাজী রকিবউদ্দীন জানান, হালনাগাদের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও ভোটার হওয়ার যোগ্যরা সারাবছরই বিধি মেনে ভোটার হতে পারবে। আগামীতে উপজেলা পর্যায়ের সার্ভার স্টেশনে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানানও সিইসি।
২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ শুরু করে। নবম সংসদ নির্বাচনের পর দুই বছর এ তালিকা হালনাগাদ করা হলেও নানা জটিলতায় পরে তা অব্যাহত থাকে নি।
নিজ এলাকায় সময় বাড়ালেন কমিশনার
দেশের কোথাও ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময়সীমা বাড়ানো না হলেও একজন নির্বাচন কমিশনার চাঁদপুরে নিজ এলাকায় দুই দিন সময় বাড়িয়েছেন। এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ ফরিদ সাংবাদিকদের জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদের শেষ সময় থাকলেও নির্বাচন কমিশনারের তৎপরতায় ৩ ও ৪ ডিসেম্বর নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত করা হয়।
“এ দুইদিনে প্রায় ৮০০ ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছে। তাদের অধিকাংশই ছাত্র ও চাকরিজীবী হওয়ায় ঢাকায় থাকেন।”
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সিইসিকে প্রশ্ন করলে তাকে উত্তর দেওয়ার সুযোগ না দিয়েই নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, “আমি ডিজি (ভোটার তালিকা প্রকল্পের মহাপরিচালক) মহোদয়ের অনুমতি নিয়েই সময় বাড়িয়েছি।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, কমিশনের সিদ্ধান্তে এ সময় বাড়ানো হলে ভালো হতো। একজন নির্বাচন কমিশনার কোনো এলাকার কমিশনার নন, তিনি সারাদেশের। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ কাজ ভালো হয় নি। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে- কারা এ নতুন ভোটার?
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, জাবেদ আলী, মো. শাহনেওয়াজ, ইসি সচিব মোহাম্মদ সাদিক ও ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আখতারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।