স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তাকারী দেশ ভারতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিজয় দিবসের ‘উপহার’ হিসেবে বেশি বেশি বিনিয়োগ আশা করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেন, “ভারত আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে সাহায্য করেছে। এখন আমরা আশা করি, আমাদের শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করে ভারত আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।”
রোববার কলকাতায় বাণিজ্য মেলা উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী কাদের।
ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা তাদের মুনাফা দেশে ফেরত নিতে পারবেন বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
“আপনারা মুনাফার প্রায় পুরোটাই দেশে ফেরত নিতে পারবেন। আমরা শুধু বাংলাদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে, অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি আনতে এবং আমাদের রপ্তানি বাড়াতে আপনাদের বিনিয়োগ চাই।”
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদিত হলে তা জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে প্রবেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে একই ধরনের পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক খুবই সামান্য।
“এই সুযোগ নিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসছে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া এমনকি চেক প্রজাতন্ত্রের বিনিয়োগকারীরাও। তাহলে, আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী দেশ কেন সেই সুযোগ নেবে না?”
বাংলাদেশের অবস্থানগত সুবিধা ব্যবহারের জন্য ভারতের ব্যবসায়ীদেরও প্রতি পরামর্শ দেন জি এম কাদের।
“ভারতের যে কোনো অঞ্চল থেকে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করা অনেক কঠিন। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পণ্য তৈরি করে তা এই প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে কম খরচে ও সহজে সরবরাহ করা যায়।”
“ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আমাদের পণ্য অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক। এটা অনেক বিনিয়োগকারীর জন্যই একটা ভাল সুযোগ।”
ভারতের বিশাল বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার ভারতীয় পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “কিন্তু শুধু বাণিজ্য নয়, আমরা এখন বিনিয়োগ চাই।”
ভারতের সর্ববৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী টাটার বাংলাদেশ থেকে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রকল্প গুটিয়ে সরে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের এই অধ্যায়কে ভুলে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, “প্রকল্পের জন্য তারা (টাটা) গ্যাসের দামের ওপর যে রেয়াতি সুবিধা চেয়েছিল, তা তখন বাংলাদেশের পক্ষে অনুকূল ছিল না। তারপরও হয়তো আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে প্রকল্পটি করা যেত।”
কিন্তু তিনি বিনিয়োগের ব্যাপারে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ‘যা চায় তা-ই পাবে’ এধরনের নিশ্চয়তা দিতে চেয়েছেন।
তবে ভারতীয় বিভিন্ন বণিক সমিতির পক্ষ থেকে ভাল সাড়া পেয়েছেন বললেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।