দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নের সম্ভাবনাকে বিকশিত করতে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বহুপক্ষীয় যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা জরুরি।
এ আহ্বানের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার ঢাকায় শুরু হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার নারী উদ্যোক্তাদের এক সিম্পোজিয়াম। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর রাজধানীর একটি হোটেলে তিন দিনের এ আলোচনার আয়োজন করেছে।
স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তানসহ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার এক শয়ের বেশি প্রতিনিধি এ সিম্পোজিয়ামে অংশ নিচ্ছেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেক এবং বৈশ্বিক নারীবিষয়ক বিশেষ দূত মিলান এস ভারভার।
উদ্বোধনী অধিবেশনে ভিডিও বার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অন্যান্য দেশের সরকারগুলোর পাশাপাশি বড় বড় আর্থিক ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও সমন্বিত নীতিমালা নিয়ে এগিয়ে আসছে। যেখানে যার ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেগুলো নিজেদের মধ্যে বিনিময় করে এবং নতুন নতুন উদ্যোগের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নারীদের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করেছেন এবং এ অঞ্চলের সবার জন্য একটি উজ্জ্বলতর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সহায়তা করছেন।’
দীপু মনি বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এ দেশের নারীরা। বাংলাদেশের প্রতিটি আর্থসামাজিক উন্নয়নে নিজেদের অপরিসীম মেধার পরিচয় রেখেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠলে তা তাঁদের আরও দ্রুত উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে সহায়তা করবে। এর ফলে আগামী প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের বিকাশ ত্বরান্বিত হবে। এ অঞ্চলের দেশগুলোর সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক নৈকট্য আর মানুষে মানুষে যোগাযোগ দক্ষিণ এশিয়ার নারী উদ্যোক্তাদের মেলবন্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
রবার্ট ও ব্লেক বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, নারীরাই হচ্ছেন পরিবর্তনের মূল শক্তি, যা দক্ষিণ এশিয়ার সম্ভাবনা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’
তিনি বলেন, এখনো নারীরা অশিক্ষা, নিপীড়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তবে নারীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হলে, তাঁরা শুধু নিজেদেরই নয়, পরিবারের ও সমাজের পরিবর্তন করে নিজেদের ভূমিকার প্রমাণ রেখেছেন।
এ প্রসঙ্গে সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের প্রশংসা করে বলেন, এ দুটি দেশে নারী উন্নয়নের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে তাদের ক্ষেত্রে সুশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় গুণগত পরিবর্তন এসেছে।
মূল প্রবন্ধে মিলান এস ভারভার বলেন, ‘নারীরা যে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অগ্রগতির চালিকাশক্তি তা প্রমাণিত। তাই দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বিকাশমান নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে সহযোগিতার নতুন সিল্ক রোডে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে আমরা সমবেত হয়েছি।’