বাংলাদেশে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন ইনসুলিন উৎপাদন করবে ডেনমার্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্ক। আর তা অবশ্যই সহনীয় দামে রোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সারা দেশে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ে ব্যাপকভাবে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। কেননা, একজন ডায়াবেটিসের রোগীও খুব সহজেই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কেবল সচেতনতা বাড়ানো দরকার। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষেরই এই রোগ সম্পর্কে সঠিক ও প্রয়োজনীয় জ্ঞান নেই।
নভো নরডিস্কের ইন্টারন্যাশনাল অপারেশন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাজিয়ার মাইক দুস্তদার এসব কথা বলেছেন। গত সপ্তাহে ঢাকায় ট্রান্সকম গ্রুপের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফের সঙ্গে নভো নরডিস্কের যৌথভাবে ইনসুলিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি ঢাকায় আসেন। তখন প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে মাইক দুস্তদার এসব কথা বলেন।
মাইক দুস্তদার বলেন, ‘১৯২৩ সালে ডেনমার্কে নভো নরডিস্ক প্রথম ইনসুলিন তৈরি শুরু করে। বর্তমানে বিশ্বের ১৯০টি দেশে আমাদের ইনসুলিন বাজারজাত হয়। বিশ্বের ইনসুলিন বাজারের ৫০ শতাংশের অংশীদারি হচ্ছে নভো নরডিস্কের। আমরা পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করি এবং এ ক্ষেত্রে ছাড় দিই না। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের কাছে আমাদের ইনসুলিন বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশের ডায়াবেটিসের রোগী, যাঁরা ইনসুলিন ব্যবহার করেন, তাঁদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ছয়-সাতজনই নভো নরডিস্কের ইনসুলিন নিয়ে থাকেন।’
মাজিয়ার মাইক দুস্তদার জানান, ১৯৫৭ সাল থেকে শুরু করে ৫০ বছর ধরে তাঁরা বাংলাদেশে ব্যবসা করছেন। তবে এত দিন আমদানি করে এখানে ইনসুলিন বাজারজাত করা হতো। এখন তাঁদের স্থানীয় অংশীদার এসকেএফের সঙ্গে ইনসুলিন উৎপাদন শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, মোট ছয়টি ওষুধ পণ্য প্রস্তুত করা হবে। এর মধ্যে তিন ধরনের ইনসুলিন থাকবে।
দুস্তদার বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যবহূত ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ইনসুলিনই নভো নরডিস্কের। আর এ দেশে ৮৪ লাখ ডায়াবেটিসের রোগী আছেন। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশনের হিসাব অনুযায়ী, ২০৩০ সালে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এই রোগ প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে আমাদের ৯০ বছরের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে। সেই আলোকেই আমরা বাংলাদেশিদের সেবা ও সাহায্য করতে চাই।’
মাইক দুস্তদার আরও বলেন, ‘নভো নরডিস্ক শুরু থেকেই প্রতিকারের চেয়ে ডায়াবেটিক প্রতিরোধ করতেই বিশেষভাবে আগ্রহী। আমাদের অঙ্গীকার হলো ডায়াবেটিস পরিবর্তনে এগিয়ে যাওয়া। লক্ষ্যটি অর্জনে নভো নরডিস্কের বেশ কিছু কার্যক্রম আছে। শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেও আছে বিশেষ কার্যক্রম। বাংলাদেশও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সঙ্গে কাজ করছি। জনসাধারণকে সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এটি অব্যাহত থাকবে।’