কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করলে পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন নিশ্চিত হবে তা জানাতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহবান জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান গোলাম রহমান।
গত শনিবার বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, দুদক পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলেই এতে অর্থায়ন করবে তারা।
এর একদিন পর রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গোলাম রহমান বিশ্বব্যাংককে উদ্দেশ্য করে বলেন, “কি করলে আগামী এক সাপ্তাহের মধ্যে অর্থায়ন নিশ্চিত হবে, তা বলুন। কোনো চাপেই কাজ হবে না। কারো খুশি-অখুশিতে আমরা চিন্তিত নই।”
তিনি বলেন, “অনুসন্ধান, বিচার বিশ্লেষণ করে তার ব্যবস্থা নেওয়ার দ্বায়িত্ব আইন অনুযায়ী আমার এবং দুই কমিশনারের। আমাদের বুদ্ধি-বিবেচনায় যা পাবো, তার আলোকে ব্যবস্থা নেবো।”
পদ্মাসেতু ইস্যুতে দুদককে বিভিন্ন দিক থেকে চাপে রাখা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কেউ বলছে, দুদক কথা শোনে না। কেউ বলছে, মামলা তুলে নিয়েছি। কেউ বলছে, দালাল। কেউ বলছে, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না হলে অর্থ নয়। একজন টকশোতে বলেছেন, গোলাম রহমান সরকারের দালাল। আপনারাও (সাংবাদিকরা) বিভিন্নভাবে লিখছেন। এগুলো মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে কিছু হবে না।”
পদ্মাসেতু প্রকল্পের দুর্নীতির অনুসন্ধান প্রতিবেদন দুদকে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ওরা (বিশ্বব্যাংক) কিছু তথ্য দিয়েছে। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে দেশিয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। আমরা নিরপেক্ষভাবে যা পাবো, তার আলোকে ব্যবস্থা নেবো।”
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর ঢাকায় আসেন লুইস গ্যাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পোর নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যাংক বিশেষজ্ঞ প্যানেল। ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক করেও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা হয়নি দুর্নীতি দমন কমিশনের। সমঝোতা ছাড়াই ঢাকা ছাড়েন বিশেষজ্ঞ দলটি।
এর দু’দিন পর বহুজাতিক এ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি বিবৃতি দেয়, পদ্মাসেতু দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই কেবল এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে এ ইস্যুতে বিশ্বব্যাংক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান চায় তারা।
পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে গত ২৯ জুন। পরে সরকার অভিযোগ তদন্তে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করার পর সংস্থাটি আবার অর্থায়নে ফিরে আসার ঘোষণা দেয় গত ২০ সেপ্টেম্বর।