জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন তৈরিতে ইনসেপটার আরেক সাফল্য

জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন তৈরিতে ইনসেপটার আরেক সাফল্য

ওষুধ শিল্পে নতুন যুগের সূচনা করলো দেশের  অন্যতম শীর্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এবার থেকে আর বিদেশ আমদানী নয়, দেশেই এখন তৈরি হবে জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন।

এই অঙ্গীকারের মধ্য দিয়েই বুধবার দুপুরে সাভারের জিরাবোতে ফিতা কেটে  ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লি. এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক।

সাভারে ৭৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের তিনটি প্রোডাকশন ফ্লোর, উৎপাদিত ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে স্থাপিত অ্যানিম্যাল হাউস এবং বিশ্বমানের কোল্ড চেইন সিস্টেম পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশে স্থাপিত বিশ্বমানের এমন স্থাপনা ও তার বিভিন্ন সুবিধাদি দেখে ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লি: এর উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এর মাধ্যমে দেশ ওষুধ শিল্পে আরও  এক ধাপ অগ্রসর হলো।

ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির বাংলানিউজকে জানান, আগে দেশের প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনগু বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো।

বর্তমানে সম্পূর্ণ নিজস¦ প্লান্টে টাইফয়েড ভ্যাকসিন (ভ্যাক্সফয়েড), র‌্যাবিস ভ্যাকসিন (র‌্যাবিক্স-ভিসি) এবং টিটেনাস ভ্যাকসিন (ভ্যাকসিটেট) উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।

ভবিষ্যতে হেপাটাইটিস-বি, পোলিও, মিজেল্স, রুবেলা, টিটেনাস অ্যান্টিটক্সিন, পেন্টাভেলেন্টসহ প্রয়োজনীয় সব ভ্যাকসিন উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বৃহৎ পরিসরে ‘হু’ জিএমপির  নীতি অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে সুবৃহৎ এ ভ্যাকসিন প্লান্ট।

বর্তমানে প্লান্টটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৯ কোটি ভায়াল। যা দিয়ে ইপিআই এর বার্ষিক চাহিদা মিটিয়ে ভ্যাকসিন বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে বলে জানান তিনি।

দেশে উৎপাদিত ভ্যাকসিন মানুষের কতটা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে প্রশ্নের জবাবে আবদুল মুক্তাদির জানান, সব শ্রেনীর মানুষের কাছে ভ্যাকসিন সহজলভ্য করার ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটি অঙ্গীকারবদ্ধ।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী প্রফেসর ডা. আ ফ ম  রহুল হক বলেন, ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লি: এর এই উদ্যোগকে সরকার স্বাগত জানায়। প্রতি বছর দেশ ৯০ মিলিয়ন ভায়াল ভ্যাকসিন আমদানি করা হয়।

বর্তমানে দেশে ইপিআই এর জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের চাহিদা মেটাতে বছরে কয়েক শ’কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়। ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লি. এর এ উদ্যোগের ফলে ভ্যাকসিন আমদানি করতে বাংলাদেশর যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয় তা বহুলাংশ সাশ্রয় হবে।

পরে মন্ত্রী ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিঃ এর ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়াল এবং ওরাল ভ্যাকসিন এর জন্য নির্মিত আলাদা তিনটি লাইন, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং তার সুবিধাদি ও প্রতিষ্ঠানটির সুবৃহৎ রক্ষণাগার ও তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ইনসেপ্টা তার অঙ্গীকার থেকে জনগণের জন্যে দেশে যে ভ্যাকসিন তৈরি শুরু করেছে- তা একটি সুন্দর জাতি গঠন এবং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে। তিনি এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানী, কেমিস্ট এবং গবেষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান বলেন,  ইনসেপ্টা ফার্মা শুরু থেকেই গুণগত মানসম্পন্ন্ ওষুধ সরবরাহ করে আসছে। তাদের এ উদ্যোগ বিদেশি ওষুধের প্রতি নির্ভরশীলতা কমাতে প্রসংশনীয় ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: হুমায়ুন কবির এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা অধিদপ্তরের  পরিচালক ডা.  সৈয়দ আবু জাফর  মো: মুসা।

এ অনুষ্ঠানে  আরও উপস্থিত ছিলেন ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিঃ এর ডাইরেক্টর প্লানিং অ্যান্ড কমার্শিয়াল হাসনিন মুক্তাদির, পরিচালক জহির উদ্দীন মাহমুদ মামুন, আবদুল মুকিত মজুমদার, আব্দুর রমিদ মজুমদার, ডাইরেক্টর টেকনিক্যাল অপারেশন মাহবুবুল করিমসহ ইনসেপ্টার উর্ধতন কর্মকর্তারা।

অর্থ বাণিজ্য শীর্ষ খবর