প্রায় ১৮ কোটি টাকা লোপাট করেছেন সোনালী ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার তিন কর্মকর্তা। অভিযোগ মিলেছে- পেনশন, বয়স্ক, বিধবা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকাই মূলত হাতিয়ে নিয়েছেন। এ অভিযোগে ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত ওই তিন কর্মকর্তা অবসর পরবর্তী ছুটিতে থাকা সাবেক ব্যবস্থাপক সিরাজুল হক, ক্যাশের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ও খলিলুর রহমান। কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হলেও অবসরে থাকা ব্যবস্থাপক ছাড়া বাকি দুই কর্মকর্তা এখনও চাকরিতে বহাল আছেন। তারা বসুন্ধরায় প্লট-ফ্ল্যাটসহ নামে-বেনামে
অনেক ভূসম্পত্তি কিনেছেন। অবশ্য তাদের ক্রয় করা এসব সম্পত্তির দলিলপত্র ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জব্দ করেছে। মামলার বিবরণ ও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, থাকা সাবেক ব্যবস্থাপক সিরাজুল হক ২০০৮ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি সোনালী ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একই বছরের ২৩শে ডিসেম্বর তিনি মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে পেনশন বিল শাখায় এবং খলিলুর রহমানকে পেনশন ও ভাতা প্রদান কাউন্টারে দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা লোপাট করতে থাকেন। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড প্রধান কার্যালয় (ইস্তেহার নং-১৬১৫) ২০০৫-এর নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের ডেস্ক নিয়মিত পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ম্যানেজার সিরাজুল হক ডেস্ক পরিবর্তন করেননি। বরং ২০০৮ সালের ২৩শে ডিসেম্বর এক আদেশে মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে পেনশন বিল সেকশনে এবং খলিলুর রহমানকে পেনশন প্রদান কাউন্টারের দায়িত্ব দেন। মিজানুর রহমান আগে থেকেই পেনশন বিল সেকশনে এবং খলিলুর রহমান ক্যাশ কাউন্টারের দায়িত্বে ছিলেন। মামলার এজাহারে শাখা ব্যবস্থাপক সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে দুরভিসন্ধিমূলক অসৎ উদ্দেশ্যে ডেস্ক পরিবর্তন না করার অভিযোগ আনা হয়। শুধু তাই নয় পেনশন সেকশনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কোন তদারকের ব্যবস্থা না করে অবৈধভাবে ওই দুই কর্মকর্তাকে পেনশন বিল প্রস্তুত ও পেনশন কাউন্টারে পেনশনের টাকা প্রদানের সুযোগ করে দেন তিনি। তবে অবশেষে একটি উড়ো চিঠির সূত্রে বেরিয়ে আসে এ তিন কর্মকর্তার যোগসাজশে লাগামহীন অর্থ আত্মসাতের ঘটনা। এরপরই ব্যাংক কয়েক দফা তদন্ত করে বিভিন্ন কৌশলে তাদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা উদঘাটন করে। এ পর্যন্ত ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের হিসাব বেরিয়ে এসেছে বলে সোনালী ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিজিএম অফিস সূত্র জানিয়েছে। নিরীক্ষা পুরোপুরি শেষ হলে তাদের আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানায় ওই সূত্র। আত্মসাতের ঘটনায় তিন কর্মকর্তাকে আসামি করে একটি মানিস্যুট ও দু’টি ফৌজদারি মামলা হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ও খলিলুর রহমান সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনে কর্মরত রয়েছেন। আর সিরাজুল ইসলাম সেখান থেকে অবসর পরবর্তী ছুটিতে রয়েছেন এখন। তার বিরুদ্ধে এ ঘটনায় অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আনা হলেও সোনালী ব্যাংকের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এর আগে তিনি শহরের নিউ মার্কেট শাখার ব্যবস্থাপক থাকাকালে একটি পেমেন্ট অর্ডারের ঘটনায় সাসপেন্ড হয়েছিলেন।
সূত্র উড়ো চিঠি: শামীম মবিন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি ক্রাইম ওয়াচ নামে প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এসব ঘটনা তুলে ধরে ২০১১ সালের ১২ই জানুয়ারি একটি চিঠি দেন। চিঠি পাওয়ার পর ব্যাংকের ভিজিল্যান্স ও কন্ট্রোল ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজ আহাম্মদ খান এবং নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকরামের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা গত ২০১১ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি সরজমিন তদন্ত করে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে উদঘাটন করেন। পরে ২২শে ফেব্রুয়ারি তারা ভিজিল্যান্স অ্যান্ড কন্ট্রোল ডিভিশনের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পরে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনে জ্যেষ্ঠ নিরীক্ষক মো. ইয়াছিন শাহ, মো. রুহুল আমিন ও শাখা পরিদর্শক শিশ আহমেদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ তদন্ত দল পাঠানো হয়। তারা ২০১১ সালের ৬ই মার্চ থেকে ব্যাংকের পেনশন বিল, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রদানের সব কার্যক্রমের ওপর পুঙ্খানুপুঙ্খ নিরীক্ষা চালান। এতে বিভিন্ন কৌশলে পেনশন ভোগীদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। এরপর পেনশন সংক্রান্ত নিরীক্ষা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের শাখা পরিদর্শক আবদুর রশিদ ও কর্মকর্তা আবদুস সামাদকে পাঠানো হয়। তারা ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসের পেনশন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম নিরীক্ষা করেন। এতে ৫১৫ জন পেনশনারের অর্থ বিভিন্নভাবে আত্মসাতের ঘটনা বেরিয়ে আসে।
যেভাবে আত্মসাৎ: নিরীক্ষা দলের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত ক্যাশের দায়িত্বে থাকা দুই কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ও খলিলুর রহমান একই পেনশনভোগীর নামে একই দিনে দু’বার পেনশন ভাতার টাকা পরিশোধ দেখিয়ে একটি প্রদান এবং অপরটি আত্মসাৎ করেন। আবার পেনশন ভোগীদের মাসিক ভাতা পরিশোধের পর আবার একই মাসে তাদের নামে দ্বিতীয় বার স্বাক্ষর জাল করে পেনশন ভাতা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। তদন্তে একই মাসে দু’বার ৫১৫ জন পেনশন ভোগীর টাকা পরিশোধের ঘটনা ধরা পড়ে। তাছাড়া পেনশন ভোগীর প্রাপ্ত পেনশন ভাতা দেয়ার আগেই স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া পেনশন বিল তৈরি করে পরিশোধ দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। তারা পেনশন বইয়ে গ্রহীতার পরিশোধিত টাকার অঙ্ক ঠিক রেখে পেনশন প্রদান শিটে অধিক টাকা লিপিবদ্ধ করেন। পেনশনারদের প্রাপ্ত পেনশনের টাকা ও ভাতাদি শাখার পিপিও/পেনশন বিলে লিপিবদ্ধ করে পরিশোধিত টাকার পরিমাণ ও পরিশোধের তারিখ প্রত্যেক পেনশনারের ডিসভার্সাস হাফ সংক্ষেপে ডি-হাফে (ট্রেজারি অফিস কর্তৃক ইস্যুকৃত কয়েক পৃষ্ঠার সরকারি কর্মচারীর চাকরির বিবরণ) লিপিবদ্ধ করার নির্দেশনা থাকলেও এরা তা করেননি। মামলার আর্জিতে বলা হয়, মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ব্যাংক ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলামের সক্রিয় সহযোগিতায় ও প্ররোচনায় ভুয়া পেনশন বিল ও বিভিন্ন রকমের ভাতাদি ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে খলিলুর রহমানের কাউন্টার থেকে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমে এসব বিলসমূহ নগদায়ন করে অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন।
আত্মসাতের পরিমাণ: ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের শাখা পরিদর্শক আবদুর রশিদ ও কর্মকর্তা আবদুস সামাদের দাখিল করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ২৭ হাজার ৯৮৬ টাকা আত্মসাৎ করে। এর মধ্যে খলিলুর রহমান ২ কোটি ৩৬ লাখ ২১ হাজার ৭৬১ এবং মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ২ কোটি ২২ লাখ ছয় হাজার ২২৪ টাকা নেন। ২০১১ সালের ২৬শে অক্টোবর বিশেষ তদন্ত দলের দাখিল করা আরেকটি তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪ মাসে তারা ৫ কোটি ৯৩ লাখ ১০ হাজার ৭০২ টাকা আত্মসাৎ করে। আত্মসাৎকৃত এই টাকা থেকে খলিলুর রহমান ৩ কোটি ছয় লাখ ৩৩ হাজার ৮০৭ টাকা এবং মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ৮৯৫ টাকা ভাগাভাগি করে নেন। ৩টি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তাদের আত্মসাৎ করা মোট টাকার পরিমাণ ১০ কোটি ৫১ লাখ ৩৮ হাজার ৬৮৮ টাকা। এরমধ্যে ৫ কোটি আট লাখ ৮৩ হাজার ১১৯ টাকা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এবং বাকি ৫ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬৮ টাকা খলিলুর রহমান আত্মসাৎ করেন। এরপর নিরীক্ষা চলতে থাকায় আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ বাড়তেই থাকে। সর্বশেষ প্রায় ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ব্যাংক সূত্র ।
অভিযুক্তদের সম্পদের বিবরণ: ঢাকার বসুন্ধরায় একাধিক ফ্ল্যাট ও গ্রামের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ ভূ-সম্পদের মালিক অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তারা। ৩ জনের মধ্যে মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ও খলিলুর রহমানের সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে একটি মামলার এজাহারে। এতে মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী মৌজায় ১০০ সাড়ে ৩০ শতক নাল জমি ও ভিটে বাড়ির মালিক। আছে ২ শতক পুকুর। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের জোয়ার সাহারা মৌজায় বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের সি ব্লকে ২৯১ নং প্লটে ১০ কাঠা জায়গায় ওপর নির্মিত এফএম হাইটস অ্যাপার্টমেন্টের ৪র্থ তলায় ১২৩০ বর্গফুট এবং ৩য় তলায় ১৩১৬ বর্গফুট আয়তনের দুটি ফ্ল্যাট-এর মালিকও তিনি। আর খলিলুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দাঁতিয়ারা মৌজায় সাড়ে ৭ শতক নাল জমির মালিকানা এবং বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের সি ব্লকে ২৯১ নং প্লটে ১০ কাঠা জায়গায় ওপর নির্মিত এফএম হাইটস অ্যাপার্টমেন্টের ৬ষ্ঠ তলায় ১২৩০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটের মালিকানার বিবরণ দেন। তবে এর বাইরে তাদের আরও অনেক সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পাইকপাড়ায় মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার রয়েছে ৫ তলা বাড়ি। গ্রামের বাড়িটিও বিশাল।
৩ কর্মকর্তার পরিচয়: অবসরে থাকা ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলামের বাড়ি কসবার গোপীনাথপুরে। বর্তমানে বাস করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব পাইকপাড়ার ব্যাংক কলোনির রহিম ম্যানশনের তেতলায়। মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার গ্রামের বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী গ্রামে। বর্তমান ঠিকানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব পাইকপাড়ায়। খলিলুর রহমান বিজয়নগর উপজেলার হাজীপুর গ্রামের মধু মিয়ার ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মোড়াইলে।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের লুকোচুরি: এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সোনালী ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রিন্সিপাল অফিসে যোগাযোগ করলে উপ মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুল মমিন পাটোয়ারী বলেন, আমার ঠিকভাবে এ বিষয়ে কোন কিছু জানা নেই। সব কিছু প্রধান কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে বলে জানান তিনি। তিনটি মামলা হওয়ার কথা নিশ্চিত করলেও চূড়ান্তভাবে আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ কততে ঠেকেছে তা তার জানা নেই বলে জানান। তবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা দেন তিনি। বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রধান শাখায় ঘটেছে জানিয়ে সেখানে যোগাযোগ করতে বলেন। প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক মো. বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নতুন যোগদান করেছেন বলে কয়েক দিনের সময় নেন। এরপর তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করলে তিনি ডেকে আনেন এসব মামলা পরিচালনায় জড়িত শাহাদৎ হোসেন নামের এক কর্মকর্তাকে। তিনটি মামলা হয়েছে, এটুকুই জানাতে পেরেছেন শাহাদৎ হোসেন। এর আগে এ সংক্রান্ত মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রিন্সিপাল অফিসের কর্মকর্তা আবুল বাশারের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করেও বিস্তারিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি তিনটি মামলা দায়ের এবং লোপাটকৃত অর্থের পরিমাণ ১৮ কোটি টাকা বলে জানান।