ক্ষমতা ছেড়েছিলাম বলেই গণতন্ত্র চালু আছে : এরশাদ

ক্ষমতা ছেড়েছিলাম বলেই গণতন্ত্র চালু আছে : এরশাদ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, “অরাজকতা ঠেকাতে ’৯০ সালে স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়েছিলাম। আমি ক্ষমতা ছেড়েছিলাম বলেই আজও দেশে গণতন্ত্র চালু আছে।”

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানী ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর (উত্তর) আয়োজিত সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এরশাদ বলেন, “আমার ক্ষমতা গ্রহণের ইচ্ছা ছিলো না। বিচারপতি ছাত্তারের অনুরোধে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলাম।”

তিনি বলেন, “আমার জনপ্রিয়তার ভয়ে সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, সাহস থাকলে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতি প্রবর্তন করুন।”

এরশাদ বলেন, “আপনারা তিন দল একজোট হয়েও আমার বিজয় ঠেকাতে পারবেনা না।”

মহাজোট ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি জানি কখন মহাজোট ছাড়তে হবে। অনেকে মনে করেন আমি জেলে যাওয়ার ভয়ে মহাজোট ছাড়ছি না। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমাকে জেলে নেওয়ার সাধ্য কারো নেই। আমি বিরোধীদলে বসার জন্য নির্বাচন করবো না।”

এরশাদ আরো বলেন, “আমি আরেকবার ক্ষমতায় যেতে চাই। তবে তা ক্ষমতার মোহে নয়, দেশ উদ্ধারের জন্য।”

আরেকবার সুযোগ পেলে উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের উপর অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে চান বলে জানান এরশাদ।

ক্ষমতায় গেলে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির প্রয়োজন হবে না।”

সরকারের সমালোচনা করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, “সরকার সবকিছুতে ষড়যন্ত্র খোঁজে। দেশে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে সেদিক তাদের নজর নেই।”

রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনজন প্রার্থীকে দাঁড় করে দেওয়া হয়। সে কারণে তিনি কাউকেই মনোনয়ন দেননি।”

আলোচনা সভায় ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “১৯৯০ সালে সেনা অভ্যুত্থান ঠেকাতেই জাতীয় পার্টি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিল। আর এর মাধ্যমে সংবিধান সংরক্ষণ করা হয়েছে।”

এছাড়া আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্য বক্তারা বলেন, “হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাউকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেনি। ওই সময়ে দেশে দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে দেশ রক্ষার জন্য এরশাদকে ক্ষমতা দেয়া হয়।

’৯০ সালে রাজনৈতিক দলগুলো দেশে হরতালসহ ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন করতে থাকে। তখন দেশের সংবিধান রক্ষার জন্য স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি এসএম ফয়সল চিশতীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহম্মদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।

এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন- জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ ছাত্তার, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, গোলাম হাবিব দুলাল, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, এম হান্নান, জিয়াউদ্দিন আহম্মদ বাবলু, করিম উদ্দিন ভরসা, গোলাম কিবরিয়া টিপু, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু প্রমুখ।

অন্যান্য বাংলাদেশ রাজনীতি শীর্ষ খবর