পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প ‘ঝুলে গেছে’ বলার সময় এখনো আসেনি মন্তব্য করে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কাজ শুরুর বিষয়টি চূড়ান্ত হতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার সেতু ভবনে সেতু বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “পদ্মা সেতুর ভবিষ্যৎ নিয়ে যে যাই বলুক, এ প্রকল্প ঝুলে গেলে তা বলার সময় এখনো আসেনি, এ জন্য ফেব্রয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”
ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণের বিষয়টি দিবালোকের মত পরিষ্কার হয়ে যাবে বলেই মনে করেন তিনি।
মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের পর এর নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে কিনা।
জবাবে যোগাযোগমন্ত্রী আরো বলেন, “অর্থমন্ত্রী কখন অর্থ দেবেন সে দিকে তাকিয়ে আছি, টাকা দিলেই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারব।”
বিশ্ব ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়টি কোন দৃষ্টিতে দেখছেন জানতে চাইলে কাদের বলেন, “বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ও দুদকের, তারাই এ বিষয়ে জবাব দিবে।”
কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি লাভালিনের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২৯১ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি স্থগিত করে বিশ্ব ব্যাংক। সরকারের পক্ষ থেকে দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করা হলে গত জুন মাসে সংস্থাটি ঋণচুক্তি বাতিল করে।
এরপর আবুল হোসেনের পদত্যাগ, প্রকল্পের ইন্টেগ্রিটি অ্যাডভাইজর মসিউর রহমান ও সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়াকে ছুটিতে পাঠানোসহ সরকারের নানামুখী তৎপরতায় সিদ্ধান্ত বদলায় বিশ্ব ব্যাংক। পাশাপাশি অভিযোগ অনুসন্ধানের অগ্রগতি পর্যবেক্ষনে একটি পর্যবেক্ষণ দলকে ঢাকা পাঠায়।
ওই পর্যবেক্ষণ দলের ঢাকা সফরের মধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন একটি খসড়া অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে সাবেক মন্ত্রী আবুল হোসেনসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে দরকষাকষির মধ্যেই মালয়শিয়ার অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা শুরু করে সরকার। দেশটির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে।
তবে মালয়শিয়ার প্রস্তাবের বিষয়টি চূড়ান্ত হতেও ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান যোগাযোগমন্ত্রী।
এদিকে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে ইতোমধ্যে প্রাক-যোগ্যতা যাচাইয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।